এই রোগটি হলে ভয় পাবার কিছু নেই ।এই রোগ হলে যারা বেশি প্যানিক করে এবং এখানে ওখানে ছোটাছুটি করে বেড়াই তারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় । তাই ভয় পাবেন না এটি হলে মাথা ঠাণ্ডা রাখুন এবং প্যানিক না করে একটু বুদ্ধি নিয়ে কাজ করুন কিছু নিয়ম মানুন সেরে যাবে । একজন কোভিড আক্রান্ত ব্যাক্তির মতামত দেখতে পারেন । তিনি তার অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন ।
আমার প্রথম উপসর্গ দেখা দেয় ১৬ জুন। আমারা তিন জন টেষ্টের জন্য স্যাম্পল দেই পরের দিন ১৭ তারিখ। আমি আমার ওয়াইফ, আমার ছেলে ১৮ তারিখ কোভিড-১৯ পজেটিভ হিসাবে রিপোর্ট পাই। এর আগে আমার মায়ের উপসর্গ আসে ৫ জুন। ৮ জুন তার রিপোর্ট আসে পজেটিভ। আমার পরিবারের আরো ৬ জন সদস্যের রিপোর্ট পজেটিভ আসে। তাদের মধ্যে ১০ বছর বয়সী আমার ভাইয়ের ছেলের উপসর্গ ছিলনা কিন্তু সে পজেটিভ ছিল। আমার ইমিডিয়েট ছোট ভাইয়েরও তাই। অন্যদের উপসর্গ ছিল।
আমি আমার ওয়াইফ আর ছেলে নেগেটিভ হই ১৯ দিনে, আমার ভাই আর ভাইয়ের ছেলে নেগেটিভ হয় ১০ দিনে। অন্যরা ১৭ দিনে।আর আমার মাকে চারবার টেষ্ট করিয়ে ৪০ দিন পর কোভিড-১৯ নেগেটিভ হন।
Related Help:
- What is isolation and quarantine ?
- Symptoms of COVID-19
- What should I do if I have COVID-19 symptoms ?
কাজেই পুনরুদ্ধার বা রিকোভারির সময় বয়স ভেদে, শারীরিক সক্ষমতা ভেদে এবং চিকিৎসা ভেদে ভিন্ন ভিন্ন। আমাদের পরিবারের সদস্যদের কোভিড-১৯ পজেটিভ হওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে, এই প্রশ্নের উত্তরের সুযোগে কোরার প্রিয় সদস্যদের কিছু কথা বলতে রাখতে চাই।
১. পজেটিভ হলে, আতংকিত হওয়া যাবে না- পরকরুনাময় আল্লাহতে অশেষ ভরসা রাখতে হবে।
২.একজন ভাল চিকিৎসকের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ রাখতে হবে। প্রথমেই তিনি কমন কিছু ওষুধ দেবেন। তা ঠিক-ঠাক মত খেতে হবে।
৩. করোনা কালীন শরীরের অক্সিজেন স্যাচুরেশন, পাল্স অক্সিমিটার দিয়ে ঘন ঘন চেক করতে হবে। বাসায় পাল্স অক্সিমিটার রাখতে হবে।
৪. অক্সিজেন স্যাচুরেশন লেভেল ৯৪/৯৩% হলে বা তার নিচে নেমে গেলে বাসায় বসে অথবা বাসায় সম্ভব না হলে হসপিটালে যেয়ে অক্সিজেন নিতে হবে।
৫. করোনাকালীন শরিরে যে সমস্ত সমস্যা দেখা দেবে তার পৃথক চিকিৎসা করাতে হবে।
৬. প্রর্যাপ্ত পরিমাণ তরল খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
৭. কাশির সমস্যা হলে ওষুধের পাশা-পাশি ঘরোয়া চিকিৎসা নিতে হবে। সারাক্ষণ মূখে লবঙ্গ দিয়ে রাখলে উপকার হতে পারে।
৯. খুব বেশী এসিডিটি হতে পারে। চিকিৎসা নিতে হবে।
১০. পেট খারাপ হলে শরিরে শক্তি ধরে রাখার জন্য ওর স্যালাইন খাওয়া যেতে পারে, যদি প্রেসার হাই না থাকে।
১১. জ্বর হলে, জ্বরের মাত্রা ডাক্তারকে বলতে হবে।
১১. ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ি রক্তের কিছু টেষ্ট করাতে হতে পারে। রক্তের টেষ্টের রিপোর্ট দেখে ডাক্তার ব্লাড থিনার জাতীয় ওষুধ/ইঞ্জেকশন সাজেষ্ট করবেন। সাথে আরো কিছু ওষুধ দিতে পারেন। যাতে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধতে না পারে।
১০. চেষ্টের এক্সরে/ সিটি স্ক্যান করা লাগতে পারে। এরপর অবস্হা দেখে ডাক্তার চিকিৎসা দেবেন।
☑ বয়সের তারতম্য অনুযায়ী এক একজনের এক একরকম সিম্পটম দেখা যাবে।
☑ অক্সিজেন কমে যাওয়া আর শ্বাস কষ্ট এক উপসর্গ নয়। শ্বাস কষ্ট হলে আইসিইউতে নিয়ে ভেন্টিলেসন দেয়া লাগতে পারে।রোগী স্বাভাবিক শ্বাস নিতে অক্ষম হলেই কেবল ভেন্টিলেশন দেয়া হয়।
☑ প্রথম উপসর্গ দেখা দেয়ার উপসর্গ ভেদে ১২/১৪ দিন পর আবার টেষ্ট করাতে হবে। নেগেটিভ হলেও ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
☑ এই সময় কিছু শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে। কোয়ারেন্টাইন টাইমে ঠিক মত খাওয়া দাওয়া করলে জটিলতা দূর হয়ে যাবে।
☑ আমার ৮২ বছর বয়স্কা মা বাসায় বসেই ৩০ দিন অক্সিজেন নিয়েছেন। বাসায় বসেই চিকিৎসা নিয়ে আল্লাহর রহমতে ৪০ দিন পরে করোনা মুক্ত হয়েছেন। আল্লাহ তাঁকে দীর্ঘজীবি করুন। তাঁর এজমা সহ বার্ধক্যজনিত বেশ কিছু জটিলতা ছিল। অথচ তিনি এই সময়ে শ্বাস কষ্টে ভোগেননি। অন্যদিকে আমাকে আমার ওয়াইফকে কিন্তু হসপিটালাইজড হতে হয়েছিল। কাজেই আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়ার কিছু নেই।
সোর্সঃ কোরা ডট কম
শেখ যাহিদ ফুয়াদ
বাংলাদেশ পুলিশ এ অ্যাসিসট্যান্ট কমিশনার