How can GPS show your current location ?
প্রযুক্তি বিশ্বের তাক লাগানো এক আবিষ্কার, জিপিএস বা গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম এর নাম হয়তবা আপনি এরমধ্যেই শুনেছেন। অনুসন্ধানী মানুষ কবুতরের মস্তিষ্কের গঠন থেকে এই আশ্চর্য জিনিস আবিস্কার করেছে। আমেরিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ১৯৭৭ সালে জিপিএস প্রযুক্তি আবিষ্কার করে। শুরুতে এর ব্যবহার একেবারেই সামরিক ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ ছিল। পরে সাধারন মানুষের ব্যবহারের জন্য এই প্রযুক্তি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।
জিপিএস আপনার লোকেশন জানার জন্য স্যাটেলাইট টেকনোলজির সাহায্য নেয়। বর্তমানে জিপিএস এর কাজের জন্য 30(More than 30 according to NASA) টি স্যাটেলাইট পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরে চলেছে এদের মধ্যে 27 টি স্যাটেলাইট বর্তমানে কার্যরত এবং বাকি 4(approx.) টি ভবিষ্যৎ ব্যাকআপ হিসাবে রাখা হয়েছে। যদি কোনোদিন ওই 30 টি স্যাটেলাইটের মধ্যে কোনো স্যাটেলাইট মলফাংশন(Malfunction) হয়ে যায় তখন ওই 4 টি স্যাটেলাইট কে কাজে লাগানো হবে।
জিপিএস এর তিনটি অংশ:
স্যাটেলাইট(Satellite)
গ্রাউন্ড স্টেশন(Ground Station)
রিসিভার(Receiver)
জিপিএস – GPS কীভাবে কাজ করে ?
আপনার ফোনে যে জিপিএস চিপটি আছে সেটা হচ্ছে জিপিএস সিগন্যাল রিসিভার। এটা জিপিএস স্যাটেলাইট থেকে আগত সিগন্যাল ধরতে পারে। এই রিসিভার চিপ কোনো তথ্য ট্রান্সমিট করে না বা স্যাটেলাইটের নিকট প্রেরণ করেনা।
শুরুতে যে ২৪টি স্যাটেলাইটের কথা বলেছিলাম, ঐ স্যাটেলাইটগুলো আসলে দিনে ২৪ ঘন্টা আর সপ্তাহের সাত দিনই এক ধরনের রেডিও সিগন্যাল ট্রান্সমিট করতে থাকে। সেই সিগন্যাল ধরার ক্ষমতা জিপিএস চিপ এর মাঝে আছে যা আপনার স্মার্টফোন কিংবা কার ট্র্যাকারে থাকে। আজকাল অবশ্য জিপিএস চিপ স্মার্টওয়াচ এমনকি চাবির রিংয়েও থাকে।
জিপিএস স্যাটেলাইটগুলোতে এটমিক ক্লক লাগানো থাকে যা দিনের পর দিন ধরে খুবই সূক্ষ্ম সময় দেয়। আর আপনার ফোনে তো একটা ঘড়ি আছেই। স্যাটেলাইটগুলো যে সিগন্যাল পাঠায় তাতে মূলত সিগন্যালটি সেন্ড করার সময়কার সময় থাকে। আপনার ফোনটি প্রাপ্ত সিগন্যালটির উৎপন্ন হওয়ার সময় আর আপনার ফোনটি যখন সেই সিগন্যালটি রিসিভ করেছে তার ব্যবধান থেকে ঐ স্যাটেলাইট আর আপনার ফোনের মধ্যকার প্রকৃত দূরত্ব হিসেব করে ফেলে। এই দূরত্ব থেকেই মূলত জিপিএস আপনার অবস্থান নির্ধারন করে।
কিন্তু এখানে একটা সমস্যা আছে। সমস্যাটা হলো, আপনি একটা জিনিসের সাথে আরেকটা জিনিসের দূরত্ব দিয়ে দ্বিতীয় জিনিসের অবস্থান নির্ণয় করতে পারবেন না। সেখানে অবস্থান নির্ণয় করতে হলে আপনাকে কমপক্ষে তিনটি জিনিসের সাপেক্ষে দূরত্ব নিতে হবে।
একটা উদাহরণ দিলে বিষয়টি ক্লিয়ার হবে। ধরা যাক, আপনার বন্ধু আপনাকে ফোনে জানালো যে সে জাতীয় সংসদ ভবন এর গেইট থেকে সরাসরি ১ কিলোমিটার দূরে আছে (বা কিছু বেশি)। শুধুমাত্র এতটুকু শুনলে আপনি কিন্তু কোনো ভাবেই জানবেন না সে আসলে কোথায় আছে। কারণ সে সংসদ ভবন থেকে যে কোনো দিকে ১ কিলোমিটার দূরে থাকতে পারে। তার মানে, সংসদ ভবনের চারপাশে যদি ১ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের একটি বৃত্ত কল্পনা করা হয় তাহলে সে বৃত্তের পরিধি বরাবর যে কোনো জায়গায় থাকতে পারে।
এবার যদি সে বলে যে সে একই সাথে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেও দেড় কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থান করছে তাহলে কি হবে? তাহলে আপনার কাছে তার অবস্থান আরেকটু ক্লিয়ার হয়ে যাবে। এবার আপনি যদি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কেন্দ্র করে ১.৫ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের বৃত্ত কল্পনা করেন তাহলে দেখবেন যে এই বৃত্তটি আগের বৃত্তটিকে দুটি বিন্দুতে ছেদ করেছে। তার মানে আপনার বন্ধু এই দুই বিন্দুর কোন একটিতে আছে। তাও কিন্তু আপনি আপনার বন্ধুর লোকেশন পেলেন না।
এবার যদি আপনার বন্ধু আপনাকে বলে যে সে তেজগাঁও রেল স্টেশন থেকেও সোজাসুজি ৫০০ মিটার দূরত্বে আছে তাহলে? তাহলে আপনার কাজ হয়েই গেলো। এবার তেজগাঁও রেল স্টেশনকে কেন্দ্র করে ৫০০ মিটার ব্যাসার্ধের বৃত্ত কল্পনা করলে দেখবেন যে তিনটি বৃত্তই একটি মাত্র সাধারণ বিন্দুতে ছেদ করেছে। আর সেই ছেদবিন্দুটি হলো ফার্মগেট বাস স্টপ। আর আপনার বন্ধু আসলে ফার্মগেট বাস স্টপেই আছে। মজার না ব্যাপারটা? এই হিসেবটিকে বলা হয় ট্রাইল্যাটেরেশন।
জিপিএসও এই নীতিতেই কাজ করে। আপনার ফোনের জিপিএস চিপটি একই সাথে ৩-৪টি জিপিএস স্যাটেলাইট থেকে নিজের দূরত্ব নির্ণয় করে নেয়। সাধারণত তিনটি জিপিএস স্যাটেলাইটের সিগন্যাল নিয়েই উপরের উদাহরণের মতো আপনার লোকেশন বের করে ফেলে আপনার ফোনটি। এভাবে যত বেশি স্যাটেলাইটের সিগনাল পাবে আপনার লোকেশনও তত বেশি এক্যুরেট পাবেন। খোলা আকাশের নিচে এই সিস্টেম সবচেয়ে ভালো কাজ করে, কারণ স্যাটেলাইট সিগন্যাল পেতে তখন সুবিধা হয়।
জিপিএস কী কাজে ব্যবহৃত হয় ?
জিপিএস হচ্ছে গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম তা নামটা শুনেই বোঝা যাচ্ছে ব্যপারটা হচ্ছে পজিশন সংক্রান্ত না মানে অফিসে আপনার কি পজিশন সেটা বলছি না। এই পজিশন হচ্ছে আপনার লোকেশন মানে আপনি কোথায় আছেন সেই পজিশন। আপনি আপনার ফোনের লোকেশন অপশন অন করলে গুগল ম্যাপে আপনার যে জায়গায় অবস্থান দেখায় সেটা মূলত জিপিএস সিস্টেমের অবদান। এটা মূলত স্যাটেলাইট ভিত্তিক একটা সেবা। সমুদ্রগামী জাহাজ কোথায় আছে তা জানা থেকে শুরু করে হালের পাঠাও, উবার, ফুডপাণ্ডা সবাই এই জিপিএস সিস্টেম ব্যবহার করেই আপনাকে আমাকে সেবা দিয়ে থাকেন। আজকাল গাড়ি চোরেরাও পড়েছে গ্যাঁড়াকলে এই জিপিএস এর কারনে। মানে গাড়ি বা ভেহিকল ট্র্যাকার আসায় গাড়ির মালিক যখন খুশী নিজের গাড়ির অবস্থান জানতে পারছেন উল্টাপাল্টা বুঝলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থাও নিতে পারছেন। এসব সবই জিপিএস এর অবদান তা এই জিপিএস এর অবদান বা ব্যবহার নিয়ে আলাপ করতে গেলে রাত শেষ হয়ে যাবে।
জিপিএস (GPS) কিভাবে আপনার বর্তমান অবস্থান দেখাতে পারে ?
- আপনার কম্পিউটারে Google Maps https://www.google.com/maps খুলুন।
- স্ক্রিনের সবচেয়ে নিচে ডানদিকে, ‘আমার লোকেশন আমার লোকেশন’ বিকল্পে ক্লিক করুন। নীল বিন্দুর মাধ্যমে আপনার লোকেশন দেখানো হয়।
- Maps কীভাবে আপনার বর্তমান লোকেশন খুঁজে পাবে
- ওয়েব ব্রাউজার থেকে পাওয়া লোকেশন সংক্রান্ত তথ্যের মতো বিভিন্ন সোর্স থেকে Maps আপনি কোথায় আছেন তা জানার চেষ্টা করে।
- Maps-কে লোকেশন অ্যাক্সেস করার অনুমতি দিন
- আপনার কম্পিউটারে, ‘সিস্টেম সংক্রান্ত পছন্দ এবং তারপর নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা সংক্রান্ত পছন্দ এবং তারপর গোপনীয়তা এবং তারপর লোকেশন ভিত্তিক পরিষেবা’ বিকল্প খুলুন।
- পরিবর্তন করার অনুমতি দিতে, স্ক্রিনের একদম নিচে বাঁদিকে, ‘লক করুন’ বিকল্পে ক্লিক করুন।
- “লোকেশন ভিত্তিক পরিষেবা চালু করুন” বিকল্পের পাশের বক্সে টিকচিহ্ন দিন।
- আপনার ব্রাউজারের পাশের বক্সে টিক চিহ্ন দিন।
- আপনার ব্রাউজারে Maps-কে লোকেশন দেখার অনুমতি দিন।