
যারা নতুন তাদের মনে কিছু প্রশ্ন থাকবে এটাই স্বাভাবিক –
কি পড়বো ?
কোথা থেকে পড়বো ?
নিজে নিজে মডেল টেস্ট করলে নম্বর উঠতেছে না ! নেগেটিভ নম্বর বেশি হচ্ছে !
পরিক্ষাই কোন প্রশ্নগুলো সবার আগে করবো ?
খুব টেনশন হচ্ছে !
অনেক আগে থেকে আমরা একটা প্রবাদ শুনে আসছি , হয়তো আপনিও শুনেছেন , কাল যা করবো তা আজ করবো , আজ যা করবো তা এখনি করবো ।
তাই আপনাকে অন্য সকলের মতো ভাবলে চলবে না । আপনার কাজ হবে ওদের ফাঁকি দিয়ে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া । কোন টেনশন করবেন না রিলাক্স থাকুন , অন্য পরীক্ষার মতো এই পরীক্ষাটিকে জাস্ট একটা পরীক্ষাই ভাবুন দেখবেন ইজি লাগছে । যখন টেনশন হবে তখন কিছু করুন প্রিয়জনের সাথে কথা বলতে পারেন বাবা – মা এবং অন্যরা যাদের আপনার ভালো লাগে । সব সময় পজেটিভ থাকবেন ।
মনে রাখবেন প্রতিযোগিতা মুলক পরিক্ষায় একটা প্ল্যান জরুরি । সারাদিন পড়লেও হবে না , আবার অল্প পড়লেও হবে যদি আপনার সঠিক প্লান করে পড়া হয় । কোথা থেকে প্রশ্নে আসে বেশি সেই টপিকসগুলোর চিহ্নিত করুন , এবার দেখুন আপনার কোন গুলোতে বেশি সমস্যা সেগুলো আগে পড়ে ফেলুন । যাদের প্রস্তুতি ভালো তারা কনফিউশন, কঠিনগুলোর জিস্ট করে লিখে লিখে পড়ুন মনে থাকবে । আর যেসব তথ্য মনে থাকে না, বা কঠিন সেগুলো আলাদা ভাবে চিহ্নিত করুন যাতে বার বার পড়া যায় ।
আপনার যদি পরিক্ষা দেবার মানসিকতা থাকে তবে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন কি কি বই পড়লে আপনার জন্য ভালো হবে । ইতঃপূর্বে আমরা উল্লখ করেছি কি কি বই বিসিএস এর জন্য ভালো ।
নতুন করে এগুলো বলে সময় নষ্ট করতে চাই না । তবে যারা মিস করেছেন তারা এখানে দেখুন (Click here!)
নিজে নিজে মডেল টেস্ট করলে নিজের গেম প্ল্যান সঠিক ভাবে এ্র্র্যাপ্লাইয়ের রিহার্সেল যেমন: ভুল দাগানো হচ্ছে কিনা , সময়ের মধ্যে শেষ হচ্ছে কিনা, আর যেগুলো আপনার ভুল হচ্ছে সেগুলোর সঠিক উত্তর করলে সেটা ব্রেনে বেশি স্থায়ী হয় । আর নেগেটিভ নম্বর কম হলে আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়বে ।
এটি নির্ভর করবে আপনি কোন পার্টে দক্ষ ও প্রশ্নপত্রের মানের উপর । যে পার্ট সহজ ও দক্ষতা ভালো সে পার্ট আগে করে সময় সেভ করতে হবে।
কঠিন প্রশ্ন দেখে ঘাবড়ানো দরকার নেই , মাথা ঠান্ডা রেখে নিজের বেসিক ধরে দাগান । যেটা পারতেছেন না সেটি নিয়ে সময় নষ্ট না করে গোল চিহ্ন দিয়ে নেক্সট করুন । এভাবে প্রথমবার গোটা প্রশ্নপত্রের সব সহজ প্রশ্নগুলো শেষ করুন । পরের বার চিন্তা করে ও রিস্ক ফ্যাক্টর বিবেচনা করে দাগান ।
আর হ্যাঁ, ভুলেও আশেপাশের কারো দেখে দাগাবেন না কিংবা কারো সাথে আলোচনা করে দাগাতে যাবেন না- এতে ভুল/ নেগেটিভ নম্বর বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
এটি নির্ভর করবে প্রশ্নের মান ও আপনার প্রস্তুতির উপর । তবে বিগত ৫টি বিসিএসে কাটনম্বর ১১৮ ক্রস করেনি। অনেকেই আবার ১২০টি দাগিয়েই বসে থাকেন , এটি ঠিক না । ব্যাক আপের জন্য আরো কয়েকটি দাগানো উচিত ; কেননা আপনি যেগুলো দাগিয়েছেন সেগুলোর মধ্যেও নরমালি সব গুলো সঠিক হবে না । এদিক বিবেচনায় ১৩৫টি দাগানো একটু সেফ জোন বলা যায়। যদি ১০টি ভুলও হয় তবুও ১২০ থাকবে ।
তবে ১৪৫ + উপরে যাওয়া শুরু করলে নেগেটিভ নম্বর বেশি হওয়া শুরু করবে । কেননা, প্রশ্ন হবে সহজ -কঠিনের সমন্বয়ে । আর পিএসসির টার্গেটই হলো বাদ দেওয়া তাই ওনারাও প্রশ্ন সেভাবেই সমন্বয় করেন।
অবশ্যই পরীক্ষার সেন্টারে পরীক্ষা হওয়ার ২ঘণ্টা আগে পৌছানোর চেষ্টা করবেন, শেষ মুহূর্তে যেতে গিয়ে যানজট পড়ে যেতে পারেন ,এতে সেন্টারে দেরিতে ঢুকে ৫-১০ নম্বর অটো মাইনাস হওয়ার চান্স বেশি। তাই আগে থেকেই খোঁজ রাখুন/ বন্দোবস্ত রাখুন যাতে দ্রুত যাওয়া যায় । আর বৃহস্পতিবার রাতে যত আর্লি সম্ভব ঘুমাতে যাবেন । শুক্রবার সকালে কিংবা রাস্তায় যেতে যেতে কোনো বই পড়বেন না এসব পড়ে কিছু হয় না। ঐ সময়টাতে ব্রেনকে রিলাক্স এ রাখার চেষ্টা করুন ।
এ্যাডমিট কার্ড, ২ টা চালু কলম ও ১টি পেন্সিল( প্রশ্নপত্র দাগানোর জন্য) সাথে নিয়ে যাবেন ।
সবার জন্য শুভকামনা
প্রশ্ন ১: আমার সাবজেক্ট অমুক,আমি কোন কোন ক্যাডার চয়েজ দিতে পারব?
উত্তর: বিসিএস এ আবেদন ফর্মে আপনার সাবজেক্ট input দেওয়ার পর আপনি যতটা/যেসব ক্যাডারে আবেদন করতে পারবেন সেসব ক্যাডারের একটা তালিকা চোখের সামনে ভেসে উঠবে। আপনি চাইলেই যেকোনো ক্যাডার চয়েস দিতে পারবেন না। উক্ত list থেকেই দিতে হবে। এবার আপনি একটি চয়েজ দিবেন নাকি সব দিবেন সেটা আপনার ব্যাপার।
প্রশ্ন২: আমার cgpa কম,এটা কি ভাইভাতে প্রভাব ফেলবে??
উত্তর: না,কোন প্রভাব ফেলবে না। শুধু পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার মত cgpa থাকলে হবে।বরং cgpa বেশি থাকলে আপনার পঠিত বিষয়ের উপর ভালো দক্ষতা রাখতে হবে কারণ আপনার পঠিত বিষয় সম্পর্কে যদি না জানেন তবে আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের / ডিপার্টমেন্টের পড়াশোনার মান নিয়ে প্রশ্ন করবে। এটা আপনার জন্য একটা নেগেটিভ সাইড হতে পারে। তাই সিজিপিএ কম হলে হতাশ হওয়ার কিছুই নেই।
প্রশ্ন ৩:আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি, আমি কি ক্যাডার হতে পারব?
উত্তর: প্রতিটা বিসিএসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হতে ৩০০ থেকে ৪০০ বা এরও বেশী ক্যাডার হয়ে থাকেন। এবার বুঝুন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা কেমন পরিশ্রমী ও মেধাবী। পুলিশ, ফরেন, admin, শিক্ষাসহ সব ক্যাডারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী রয়েছেন।
প্রশ্ন ৪:আমি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, আমি ক্যাডার হতে পারব??
উত্তর:আগে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সরকারি চাকরির দিকে ছুটত কম। এখন তাদের মধ্যে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে এবং ক্যাডার হচ্ছেন। 34 তম বিসিএস এ ফরেন তথা সম্মিলিত মেধা তালিকায় প্রথম যিনি তিনি কিন্তু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আহসানউল্লাহর ছাত্র ছিলেন।
প্রশ্ন ৫:আমি কোন কোন ক্যাডার চয়েজ দেবো??
উত্তর: আপনার যে যে ক্যাডার ভালো লাগে সেটা চয়েজে রাখবেন। পোস্ট একটি হলেও তাই করবেন। হুজুগে চয়েজ দিবেন না। প্রতিটা ক্যাডার সম্পর্কে জেনে নিবেন আগে।
প্রশ্ন ৬: আমার হাত ভেঙেছিল/ পা ভেঙেছিল, আমি কি পুলিশ ক্যাডার চয়েস দিতে পারব?
উত্তর: আপনি যদি মনে করেন পুলিশ একাডেমীর কঠোর ট্রেনিং এর জন্যে আপনি ফিট তবে অবশ্যই দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় কোন ধরনের হাত বা পায়ের এক্সরে করানো হয় না শুধুমাত্র বুকের এক্স-রে করানো হয়।
প্রশ্ন ৭: বিসিএস আবেদনে এনআইডি কি আবশ্যিক?
উত্তর: না। যদি আপনার এনআইডি থেকে থাকে তবে আপনি অবশ্যই সেই এনআইডি নাম্বার সাবমিট করবেন। কেননা সেখানে অপশন থাকে আপনার এনআইডি আছে কি নাই ? থাকার পরেও যদি নাই অপশন দেন তাহলে এটি মিথ্যা তথ্য দিলেন ।উল্লেখ্য বর্তমান সার্কুলারগুলোতে যদি এনআইডি বাধ্যতামূলক করে তবে অবশ্যই এনআইডি নম্বর লাগবে।
প্রশ্ন ৮ঃ আমার এনআইডি তে নিজের নাম/ বাবার নাম/ মায়ের নাম ভুল আছে। বিসিএস আবেদনে কোন প্রবলেম হবে?
উত্তর: না, বিসিএস আবেদন এ কোন প্রবলেম হবেনা। তবে এনআইডির স্ক্যান কপি রেখে এটা সংশোধন করে নিবেন। তাতে ভেরিফিকেশনে আর কোন সমস্যা হবে না।
প্রশ্ন ৯: আমি কি এনআইডিতে দেওয়া ঠিকানা স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করব?
উত্তর: এনআইডিতে উল্লেখিত ঠিকানা যদি আপনার স্থায়ী ঠিকানা হয় তবে অবশ্যই সেটা ব্যবহার করবেন। আপনার বাবার ঠিকানা অর্থাৎ উত্তরাধিকারসূত্রে যেখানে সম্পত্তি প্রাপ্ত হবেন সেই ঠিকানায় আপনার স্থায়ী ঠিকানা। আর বিসিএস আবেদনে সে ঠিকানায় ব্যবহার করতে হবে।এনআইডির ঠিকানা আপনার স্থায়ী ঠিকানা নির্দেশ করে না । আপনি কোন এলাকায় ভোটার হয়েছেন সেটা নির্দেশ করে । আপনি ভোটার এলাকা পরিবর্তন করে অন্য ঠিকানায় যেতে পারেন সে ক্ষেত্রেও আপনার স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন হবে না ।
প্রশ্ন ১০ঃ বিসিএস আবেদনে এনআইডির স্বাক্ষরটায় ব্যবহার করতে হবে ?
উত্তরঃ না । সহজ , বিকৃত হবে না এরুপ স্বাক্ষর দিবেন ।
প্রশ্ন ১১ঃ আমার মা / বাবার আইডি কার্ডের আমার আইডি কার্ডের মিল নেই । কোন প্রবলেম হবে ?
উত্তরঃ না । আপনার সার্টিফিকেটের সাথে আপনার এনআইডি মিল থাকলেই হবে ।
প্রশ্ন ১২ঃ আমার স্থায়ী ঠিকানা আর বর্তমান ঠিকানা একই দিলে কি সমস্যা হবে?
উত্তরঃ না । বরং ভেরিফিকেশন সহজ হবে ।
প্রশ্ন ১৩ঃ আমার এসএসসি সার্টিফিকেটের সাথে এইচ এস সি ও অনার্সের সার্টিফিকেটের নামের মিল নেই । কোন প্রবলেম হবে ?
উত্তরঃ অবশ্যই প্রবলেম হবে । আপনি বোর্ড এবং ভার্সিটিতে যোগাযোগ করে বাকি দুইটা অনুরুপ করে নেন ।
প্রশ্ন ১৪ঃ আমরা বিবাহিতরা পার্মানেন্ট এড্রেস কি দেব ?
উত্তরঃ বাবার বাড়ি দেওয়ায় ভালো । শ্বশুর বাড়ি দিলেও কোন সমস্যা হওয়ার কথা না ।
প্রশ্ন ১৫ঃ আমার স্থায়ী ঠিকানা নদীতে ভেঙে চলে গেছে আমি কোন ঠিকানা স্থায়ী হিসাবে দেব ?
উত্তরঃ আপনার যদি অন্য জায়গায় স্থায়ী ঠিকানা না থাকে অর্থাৎ জমির মালিকানা না থাকে তবে নদীতে ভেঙে যাওয়া স্থায়ী ঠিকানায় আপনার স্থায়ী ঠিকানা । আপনাকে উক্ত এলাকার চেয়ারম্যান স্থায়ী হিসাবে সার্টিফিকেট দিলেই হবে ।
প্রশ্ন ১৬ঃ আমি চশমা ব্যবহার করি,আমি কি পুলিশ/আনসার ক্যাডার চয়েজ দিতে পারবো?
উত্তরঃ পারবেন। তবে আপনার চশমা ব্যবহারের পর চোখের ভিশন ৬/৬ হতে হবে।
সবার জন্য শুভ কামনা রইল।
*********************************
প্রকাশ কুমার নাথ
বিসিএস ( তথ্য ) , ৩৬ তম বিসিএস ।