গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশ রােড ট্রান্সপাের্ট অথরিটি
ড্রাইভিং লাইসেন্সের লিখিত পরীক্ষার স্ট্যান্ডার্ড প্রশ্ন ব্যাংক ও উত্তর
০১. প্রশ্ন : মােটরযান কাকে বলে ?
উত্তর : মােটরযান আইনে মােটরযান অর্থ কোনাে যন্ত্রচালিত যান, যার চালিকাশক্তি বাইরের বা ভিতরের কোনাে উৎস হতে সরবরাহ হয়ে
থাকে।
০২. প্রশ্ন : গাড়ি চালনাকালে কী কী কাগজপত্র গাড়ির সঙ্গে রাখতে হয় ?
উত্তর :
- ক. ড্রাইভিং লাইসেন্স
- খ. রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট (ব্লু-বুক)
- গ. ট্যাক্সটোকেন
- ঘ. ইনসিওরেন্স সার্টিফিকেট
- ঙ.ফিটনেস সার্টিফিকেট (মােটরসাইকেলের ক্ষেত্রে প্রযােজ্য নয়) এবং
- চ. রুপারমিট (মােটরসাইকেল এবং চালক ব্যতীত সর্বোচ্চ ৭ আসন বিশিষ্ট
০৩. প্রশ্ন : গাড়ি চালনার আগে করণীয় কাজ কী কী ?
উত্তর :
- ক. গাড়িতে জ্বালানি আছে কি না পরীক্ষা করা, না থাকলে পরিমাণ মতাে নেওয়া।
- খ. রেডিয়েটর ও ব্যাটারিতে পানি আছে কি না পরীক্ষা করা, না থাকলে পরিমাণ মতাে নেওয়া।
- গ. ব্যাটারি কানেকশন পরীক্ষা করা।
- ঘ. লুবইঞ্জিন অয়েলের লেবেল ও ঘনত্ব পরীক্ষা করা, কম থাকলে পরিমাণ মতাে নেওয়া।
- ঙ. মাস্টার সিলিন্ডারের ব্রেকফ্লুইড, ব্রেকঅয়েল পরীক্ষা করা, কম থাকলে নেওয়া।
- চ. গাড়ির ইঞ্জিন, লাইটিং সিস্টেম, ব্যাটারি, স্টিয়ারিং ইত্যাদি সঠিকভাবে কাজ করছে কি না, নাট-বােল্ট টাইট আছে কি না অর্থাৎ সার্বিকভাবে মােটরযানটি ত্রুটিমুক্ত আছে কি না পরীক্ষা করা।
- ছ. ব্রেক ও ক্লাচের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা।
- জ. অগ্নিনির্বাপকযন্ত্র এবং ফাস্টএইড বক্স গাড়িতে রাখা।
- ঝ. গাড়ির বাইরের এবং ভিতরের বাতির অবস্থা, চাকা (টায়ার কন্ডিশন/হাওয়া/নাট/এলাইমেন্ট/রােটেশন/স্পেয়ার চাকা) পরীক্ষা করা।
০৪. প্রশ্ন : সার্ভিসিং বলতে কী বুঝায় এবং গাড়ি সার্ভিসিংয়ে কী কী কাজ করা হয় ?
উত্তর: মােটরযানের ইঞ্জিন ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশের কার্যক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য নির্দিষ্ট সময় পরপর যে-কাজগুলাে করা হয়, তাকে সার্ভিসিং বলে।
গাড়ি সার্ভিসিংয়ে করণীয় কাজ:
- ক. ইঞ্জিনের পুরাতন লুবঅয়েল (মবিল) ফেলে দিয়ে নতুন লুবঅয়েল দেওয়া। নতুন লুবঅয়েল দেওয়ার আগে ফ্লাশিং অয়েল দ্বারা ফ্লাশ করা।
- গ. ভারী মােটরযানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন গ্রিজিং পয়েন্টে গ্রিজগান দিয়ে নতুন গ্রিজ দেওয়া।
- ঘ. গাড়ির স্পেয়ার হুইলসহ প্রতিটি চাকাতে পরিমাণমতাে হাওয়া দেওয়া।
- ঙ. লুবঅয়েল (মবিল) ফিল্টার, ফুয়েল ফিল্টার ও এয়ারক্লিনার পরিবর্তন করা।
০৫. প্রশ্ন : রাস্তায় গাড়ির কাগজপত্র কে কে চেক করতে পারেন/কোন কোন ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিগণকে গাড়ির কাগজ দেখাতে বাধ্য ?
উত্তর: সার্জেন্ট বা সাব-ইনসপেক্টরের নিচে নয় এমন পুলিশ কর্মকর্তা, মােটরযান পরিদর্শকসহ বিআরটিএর কর্মকর্তা এবং মােবাইলকোর্টের কর্মকর্তা।
০৬. প্রশ্ন : মােটরসাইকেলে হেলমেট পরিধান ও আরােহী বহন সম্পর্কে আইন কী ?
উত্তর: মােটরসাইকেলে চালক ব্যতীত ১ জন আরােহী বহন করা যাবে এবং উভয়কেই হেলমেট পরিধান করতে হবে (মােটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর ধারা-১০০)।
০৭. প্রশ্ন : সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ কী কী ?
উত্তর :
- ক. অত্যধিক আত্মবিশ্বাস,
- খ. মাত্রাতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানাে,
- গ, অননুমােদিত ওভারটেকিং এবং
- ঘ. অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বহন।
০৮. প্রশ্ন : গাড়ি দুর্ঘটনায় পতিত হলে চালকের করনীয় কী ?
উত্তর : আহত ব্যক্তির চিকিৎসা নিশ্চিত করা, প্রয়ােজনে নিকটস্থ হাসপাতালে স্থানান্তর করা এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিকটবর্তী থানায় দুর্ঘটনার বিষয়ে রিপাের্ট করা।
০৯. প্রশ্ন : আইন অনুযায়ী গাড়ির সর্বোচ্চ গতিসীমা কত ?
উত্তর : হালকা মােটরযান ও মােটরসাইকেলের ক্ষেত্রে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭০ মাইল, মাঝারি বা ভারী যাত্রীবাহী মােটরযানের ক্ষেত্রে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩৫ মাইল এবং মাঝারি বা ভারী মালবাহী মােটরযানের ক্ষেত্রে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩০ মাইল।
১০. প্রশ্ন : মােটর ড্রাইভিং লাইসেন্স কী ?
উত্তর: সর্বসাধারণের ব্যবহার্য স্থানে মােটরযান চালানাের জন্য লাইসেন্স কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইস্যুকৃত বৈধ দলিলই মােটর ড্রাইভিং লাইসেন্স।
১১. প্রশ্ন : অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স কাকে বলে ?
উত্তর: যে-লাইসেন্স দিয়ে একজন চালক কারাে বেতনভােগী কর্মচারী না হয়ে মােটর সাইকেল, হালকা মােটরযান এবং অন্যান্য মােটরযান (পরিবহনযান ব্যতীত) চালাতে পারে, তাকে অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স বলে।
১২. প্রশ্ন : ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বয়স কত ?
উত্তর: পেশাদার চালকের ক্ষেত্রে ২০ বছর এবং অপেশাদার চালকের ক্ষেত্রে ১৮ বছর।
১৩. প্রশ্ন : কোন কোন ব্যক্তি ডাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার অযােগ্য বলে বিবেচিত হবে ?
উত্তর: মৃগীরােগী, উন্মাদ বা পাগল, রাতকানারােগী, কুষ্ঠরােগী, হৃদরােগী, অতিরিক্ত মদ্যপব্যক্তি, বধিরব্যক্তি এবং বাহু বা পা চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে অসুবিধা হয় এমন ব্যক্তি।
১৪. প্রশ্ন : হালকা মােটরযান কাকে বলে ?
উত্তর : যে-মােটরযানের রেজিস্ট্রিকৃত বােঝাইওজন ৬,০০০ পাউন্ড বা ২,৭২৭ কেজির অধিক নয়, তাকে হালকা মােটরযান বলে।
১৫. প্রশ্ন : মধ্যম বা মাঝারি মােটরযান কাকে বলে ?
উত্তর: যে-মােটরযানের রেজিস্ট্রিকৃত বােঝাইওজন ৬,০০০ পাউন্ড বা ২,৭২৭কেজির অধিক কিন্তু ১৪,৫০০ পাউন্ড বা ৬,৫৯০ কেজির অধিক নয়, তাকে মধ্যম বা মাঝারি মােটরযান বলে।
১৬. প্রশ্ন : ভারী মােটরযান কাকে বলে ?
উত্তর: যে-মােটরযানের রেজিস্ট্রিকৃত বােঝাইওজন ১৪,৫০০ পাউন্ড বা ৬,৫৯০ কেজির অধিক, তাকে ভারী মােটরযান বলে।
১৭. প্রশ্ন : প্রাইভেট সার্ভিস মােটরযান (private service vehicle) কাকে বলে ?
উত্তরঃ ড্রাইভার ব্যতীত আটজনের বেশি যাত্রী বহনের উপযােগী যে-মােটরযান মালিকের পক্ষে তার ব্যবসা সম্পর্কিত কাজে এবং বিনা ভাড়ায় যাত্রী বহনের জন্য ব্যবহৃত হয়, তাকে প্রাইভেট সার্ভিস মােটরযান বলে।
১৮. প্রশ্ন : ট্রাফিক সাইন বা রােড সাইন (চিহ্ন) প্রধানত কত প্রকার ও কী কী ?
উত্তরঃ
ট্রাফিক সাইন বা চিহ্ন প্রধানত তিন প্রকার-
- ক. বাধ্যতামূলক, যা প্রধানত বৃত্তাকৃতির হয়,
- খ. সতর্কতামূলক, যা প্রধানত ত্রিভুজাকৃতির হয় এবং
- গ. তথ্যমূলক, যা প্রধানত আয়তক্ষেত্রাকার হয়।
১৯. প্রশ্ন : লাল বৃত্তাকার সাইন কী নির্দেশনা প্রদর্শন করে ?
উত্তর: নিষেধ বা করা যাবে না বা অবশ্যবর্জনীয় নির্দেশনা প্রদর্শন করে।
২০. প্রশ্ন : নীল বৃত্তাকার সাইন কী নির্দেশনা প্রদর্শন করে ?
উত্তর: করতে হবে বা অবশ্যপালনীয় নির্দেশনা প্রদর্শন করে।
২১. প্রশ্ন : লাল ত্রিভুজাকৃতির সাইন কী নিদের্শনা প্রদর্শন করে ?
উত্তর: সতর্ক হওয়ার নির্দেশনা প্রদর্শন করে।
২২. প্রশ্ন : নীল রঙের আয়তক্ষেত্র কোন ধরনের সাইন ?
উত্তরঃ সাধারণ তথ্যমূলক সাইন।
২৩. প্রশ্ন : সবুজ রঙের আয়তক্ষেত্র কোন ধরনের সাইন?
উত্তরঃ পথনির্দেশক তথ্যমূলক সাইন, যা জাতীয় মহাসড়কে ব্যবহৃত হয়।
২৪. প্রশ্ন : কালাে বর্ডারের সাদা রঙের আয়তক্ষেত্র কোন ধরনের সাইন?
উত্তরঃ এটিও পথনির্দেশক তথ্যমূলক সাইন, যা মহাসড়ক ব্যতীত অন্যান্য সড়কে ব্যবহৃত হয়।
২৫. প্রশ্ন : ট্রাফিক সিগন্যাল বা সংকেত কত প্রকার ও কী কী ?
উত্তর: ৩ (তিন) প্রকার। যেমন- ক. বাহুর সংকেত, খ. আলাের সংকেত ও গ. শব্দ সংকেত।
২৬. প্রশ্ন : ট্রাফিক লাইট সিগন্যালের চক্র বা অনুক্রম (sequence) গুলি কী কী ?
উত্তরঃ লাল-সবুজ-হলুদ এবং পুনরায় লাল।
২৭. প্রশ্ন : লাল, সবুজ ও হলুদ বাতি কী নির্দেশনা প্রদশন করে ?
উত্তর: লালবাতি জ্বললে গাড়িকে থামুনলাইন’এর পেছনে থামায়ে অপেক্ষা করতে হবে, সুবজবাতি জ্বললে গাড়ি নিয়ে অগ্রসর হওয়া যাবে এবং হলুদবাতি জ্বললে গাড়িকে থামানাের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
২৯. প্রশ্ন : পাকা ও ভালাে রাস্তায় ৫০ কিলােমিটার গতিতে গাড়ি চললে নিরাপদ দূরত্ব কত হবে?
উত্তর: ২৫ মিটার।
৩০. প্রশ্ন : পাকা ও ভালাে রাস্তায় ৫০ মাইল গতিতে গাড়ি চললে নিরাপদ দূরত্ব কত হবে ?
উত্তর: ৫০ গজ বা ১৫০ ফুট।
৩১. প্রশ্ন : লাল বৃত্তে ৫০ কি.মি. লেখা থাকলে কী বুঝায় ?
উত্তর: গাড়ির সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ৫০ কি.মি. অর্থাৎ ঘণ্টায় ৫০ কিলােমিটারের বেশি গতিতে গাড়ি চালানাে যাবে না।
৩২. প্রশ্ন : নীল বৃত্তে ঘণ্টায় ৫০ কি.মি. লেখা থাকলে কী বুঝায় ?
উত্তর: সর্বনিম্ন গতিসীমা ঘণ্টায় ৫০ কি.মি. অর্থাৎ ঘণ্টায় ৫০ কিলােমিটারের কম গতিতে গাড়ি চালানাে যাবে না।
৩৩. প্রশ্ন : লাল বৃত্তের মধ্যে হর্ন আঁকা থাকলে কী বুঝায়?
উত্তর: হর্ন বাজানাে নিষেধ।
৩৪. প্রশ্ন : লাল বৃত্তের ভিতরে একটি বড় বাসের ছবি থাকলে কী বুঝায়?
উত্তর: বড় বাস প্রবেশ নিষেধ।
৩৫. প্রশ্ন : লাল বৃত্তে একজন চলমান মানুষের ছবি আঁকা থাকলে কী বুঝায় ?
উত্তর ও পথচারী পারাপার নিষেধ।
৩৬. প্রশ্ন : লাল ত্রিভুজে একজন চলমান মানুষের ছবি আঁকা থাকলে কী বুঝায়?
উত্তর: সামনে পথচারী পারাপার, তাই সাবধান হতে হবে।
৩৭. প্রশ্ন : লাল বৃত্তের ভিতর একটি লাল ও একটি কালাে গাড়ি থাকলে কী বুঝায়?
উত্তর: ওভারটেকিং নিষেধ।
৩৮. প্রশ্ন : আয়তক্ষেত্রে P’ লেখা থাকলে কী বুঝায় ?
উত্তর: পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত স্থান।
৩৯. প্রশ্ন : কোন কোন স্থানে গাড়ির হর্ন বাজানাে নিষেধ ?
উত্তর : নীরব এলাকায় গাড়ির হর্ন বাজানাে নিষেধ। হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত বা অনুরূপ প্রতিষ্ঠানসমূহের চতুর্দিকে
১০০ মিটার পর্যন্ত এলাকা নীরব এলাকা হিসাবে চিহ্নিত।
৪০. প্রশ্ন : কোন কোন স্থানে ওভারটেক করা নিষেধ ?
উত্তর :
- ক. ওয়ারটেকিং নিষেধ সম্বলিত সাইন থাকে এমন স্থানে,
- খ. জাংশনে,
- গ. ব্রিজ/কালভার্ট ও তার আগে পরে নির্দিষ্ট দূরত্ব,
- ঘ. সরু রাস্তায়, ঙ, হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এলাকায়।
৪১. প্রশ্ন : কোন কোন স্থানে গাড়ি পার্ক করা নিষেধ ?
উত্তর :
- ক. যেখানে পার্কিং নিষেধ বাের্ড আছে এমন স্থানে,
- খ. জাংশনে,
- গ. ব্রিজ/কালভার্টের ওপর,
- ঘ. সরু রাস্তায়,
- ঙ. হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এলাকায়,
- চ. পাহাড়ের ঢালে ও ঢালু রাস্তায়, ফুটপাত, পথচারী পারাপার এবং তার আশেপাশে,
- ছ. বাস স্টপেজ ও তার আশেপাশে এবং
- জ. রেলক্রসিং ও তার আশেপাশে।
৪২. প্রশ্ন : গাড়ি রাস্তার কোনপাশ দিয়ে চলাচল করবে ?
উত্তর : গাড়ি রাস্তার বামপাশ দিয়ে চলাচল করবে। যে-রাস্তায় একাধিক লেন থাকবে সেখানে বামপাশের লেনে ধীর গতির গাড়ি, আর ডানপাশের লেনে দ্রুত গতির গাড়ি চলাচল করবে।
৪৩, প্রশ্ন : কখন বামদিক দিয়ে ওভারটেক করা যায় ?
উত্তর: যখন সামনের গাড়ি চালক ডানদিকে মােড় নেওয়ার ইচ্ছায় যথাযথ সংকেত দিয়ে রাস্তার মাঝামাঝি স্থানে যেতে থাকবেন তখনই
পেছনের গাড়ির চালক বামদিক দিয়ে ওভারটেক করবেন।
৪৪. প্রশ্ন : চলন্ত অবস্থায় সামনের গাড়িকে অনুসরণ করার সময় কী কী বিষয় লক্ষ্য রাখা উচিত ?
উত্তরঃ (ক) সামনের গাড়ির গতি (স্পিড) ও গতিবিধি, (খ) সামনের গাড়ি থামার সংকেত দিচ্ছে কি না, (গ) সামনের গাড়ি ডানে/বামে
ঘুরার সংকেত দিচ্ছে কি না, (ঘ) সামনের গাড়ি হতে নিরাপদ দূরত্ব বজায় থাকছে কি না।
৪৫. প্রশ্ন : রাস্তারপাশে সতর্কতামূলক “স্কুল/শিশু” সাইন বাের্ড থাকলে চালকের করণীয় কী?
উত্তরঃ
(ক) গাড়ির গতি কমিয়ে রাস্তার দু-পাশে ভালােভাবে দেখে-শুনে সতর্কতার সাথে অগ্রসর হতে হবে।
(খ) রাস্তা পারাপারের অপেক্ষায় কোনাে শিশু থাকলে তাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
৪৬. প্রশ্ন : গাড়ির গতি কমানাের জন্য চালক হাত দিয়ে কীভাবে সংকেত দিবেন?
উত্তর: চালক তার ডানহাত গাড়ির জানালা দিয়ে সােজাসুজি বের করে ধীরে ধীরে উপরে-নীচে উঠানামা করাতে থাকবেন।
৪৭. প্রশ্ন : লেভেলক্রসিং বা রেলক্রসিং কত প্রকার ও কী কী ?
উত্তর :
লেভেলক্রসিং বা রেলক্রসিং ২ প্রকার।
- ক. রক্ষিত রেলক্রসিং বা পাহারাদার নিয়ন্ত্রিত রেলক্রসিং,
- খ. অরক্ষিত রেলক্রসিং বা পাহারাদারবিহীন রেলক্রসিং।
৪৮. প্রশ্ন : রক্ষিত লেভেলক্রসিংয়ে চালকের কর্তব্য কী ?
উত্তর : গাড়ির গতি কমিয়ে সতর্কতার সাথে সামনে আগাতে হবে। যদি রাস্তা বন্ধ থাকে তাহলে গাড়ি থামাতে হবে, আর খােলা থাকলে ডানেবামে ভালােভাবে দেখে অতিক্রম করতে হবে।
৪৯. প্রশ্ন : অরক্ষিত লেভেলক্রসিংয়ে চালকের কর্তব্য কী?
উত্তর: গাড়ির গতি একদম কমিয়ে সতর্কতার সাথে সামনে আগাতে হবে, প্রয়ােজনে লেভেলক্রসিংয়ের নিকট থামাতে হবে। এরপর
ডানেবামে দেখে নিরাপদ মনে হলে অতিক্রম করতে হবে।
৫০. প্রশ্ন : বিমানবন্দরের কাছে চালককে সতর্ক থাকতে হবে কেন ?
উত্তর :
- (ক) বিমানের প্রচণ্ড শব্দে গাড়ির চালক হঠাৎ বিচলিত হতে পারেন,
- (খ) সাধারণ শ্রবণ ক্ষমতার ব্যাঘাত ঘটতে পারে,
- (গ) বিমানবন্দরে ভিভিআইপি / ভিআইপি বেশি চলাচল করে বিধায় এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হয়।
৫১. প্রশ্ন : মােটরসাইকেল চালক ও আরােহীর হেলমেট ব্যবহার করা উচিত কেন ?
উত্তর: মানুষের মাথা শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। এখানে সামান্য আঘাত লাগলেই মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে। তাই দুর্ঘটনায় মানুষের মাথাকে রক্ষা করার জন্য হেলমেট ব্যবহার করা উচিত।
৫২. প্রশ্ন : গাড়ির পেছনের অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য কতক্ষণ পর পর লুকিং গ্লাস দেখতে হবে ?
উত্তর: প্রতিমিনিটে ৬ থেকে ৮ বার।
৫৩. প্রশ্ন : পাহাড়ি রাস্তায় কী কী সতর্কতা অবলম্বন করতে হয় ?
উত্তরঃ সামনের গাড়ি থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ১ নং গিয়ারে বা ফার্স্ট গিয়ারে সতর্কতার সাথে ধীরে ধীরে ওপরে উঠতে হবে। পাহাড়ের চূড়ার কাছে গিয়ে আরাে ধীরে উঠতে হবে, কারণ চূড়ায় দৃষ্টিসীমা অত্যন্ত সীমিত। নিচে নামার সময় গাড়ির গতি ক্রমে বাড়তে থাকে বিধায় সামনের গাড়ি থেকে বাড়তি দূরত্ব বজায় রেখে নামতে হবে। ওঠা-নামার সময় কোনােক্রমেই ওভারটেকিং করা যাবে না।
৫৪. প্রশ্ন : বৃষ্টির মধ্যে গাড়ি চালনার বিষয়ে কী কী সতর্কতা অবলম্বন করতে হয় ?
উত্তরঃ বৃষ্টির সময় রাস্তা পিচ্ছিল থাকায় ব্রেক কম কাজ করে। এই কারণে বাড়তি সতর্কতা হিসাবে ধীর গতিতে (সাধারণ গতির চেয়ে অর্ধেক গতিতে) গাড়ি চালাতে হবে, যাতে ব্রেক প্রয়ােগ করে অতি সহজেই গাড়ি থামানাে যায়। অর্থাৎ ব্রেক প্রয়ােগ করে গাড়ি যাতে অতি সহজেই থামানাে বা নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেইরূপ ধীর গতিতে বৃষ্টির মধ্যে গাড়ি চালাতে হবে।
৫৫. প্রশ্ন : ব্রিজে ওঠার পূর্বে একজন চালকের করণীয় কী?
উত্তর : ব্রিজ বিশেষকরে উঁচু ব্রিজের অপরপ্রান্ত থেকে আগত গাড়ি সহজে দৃষ্টিগােচর হয় না বিধায় ব্রিজে ওঠার পূর্বে সতর্কতার সাথে গাড়ির গতি কমিয়ে উঠতে হবে। তাছাড়া, রাস্তার তুলনায় ব্রিজের প্রস্থ অনেক কম হয় বিধায় ব্রিজে কখনাে ওভারটেকিং করা যাবে ।
৫৬. প্রশ্ন : পার্শ্বরাস্তা থেকে প্রধান রাস্তায় প্রবেশ করার সময় কী কী সতর্কতা অবলম্বন করতে হয় ? উত্তর: পার্শ্বরাস্তা বা ছােট রাস্তা থেকে প্রধান রাস্তায় প্রবেশ করার আগে গাড়ির গতি কমায়ে, প্রয়ােজনে থামায়ে, প্রধান রাস্তার গাড়িকে নির্বিঘ্নে আগে যেতে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রধান সড়কে গাড়ির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে সুযােগমত সতর্কতার সাথে প্রধান রাস্তায় প্রবেশ করতে হবে।
৫৭. প্রশ্ন : রাস্তার ওপর প্রধানত কী কী ধরনের রােডমার্কিং অঙ্কিত থাকে ?
উত্তর:
রাস্তার ওপর প্রধানত ০৩ ধরনের রােডমাকিং অঙ্কিত থাকে।
- ক. ভাঙালাইন, যা অতিক্রম করা যায়।
- খ. একক অখন্ডলাইন, যা অতিক্রম করা নিষেধ, তবে প্রয়ােজনবিশেষ অতিক্রম করা যায়।
- গ. দ্বৈত অখন্ডলাইন, যা অতিক্রম করা নিষেধ এবং আইনত দণ্ডনীয়। এই ধরনের লাইন দিয়ে ট্রাফিকআইল্যান্ড বা রাস্তার বিভক্তি বুঝায়।
৫৮. প্রশ্ন : জেব্রাক্রসিংয়ে চালকের কর্তব্য কী ?
উত্তর: জেব্রাক্রসিংয়ে পথচারীদের অবশ্যই আগে যেতে দিতে হবে এবং পথচারী যখন জেব্রাক্রসিং দিয়ে পারাপার হবে তখন গাড়িকে অবশ্যই তার আগে থামাতে হবে। জেব্রাক্রসিংয়ের ওপর গাড়িকে থামানাে যাবে না বা রাখা যাবে না।
৫৯. প্রশ্ন : কোন কোন গাড়িকে ওভারটেক করার সুযােগ দিতে হবে ?
উত্তর : যে-গাড়ির গতি বেশি, এ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস ইত্যাদি জরুরি সার্ভিস, ভিভিআইপি গাড়ি ইত্যাদিকে।
৬০. প্রশ্ন : হেড লাইট ফ্ল্যাশিং বা আপার ডিপার ব্যবহারের নিয়ম কী ?
উত্তর : শহরের মধ্যে সাধারণত ‘লাে-বিম বা ডিপার বা মৃদুবিম’ ব্যবহার করা হয়। রাতে কাছাকাছি গাড়ি না থাকলে অর্থাৎ বেশিদূর পর্যন্ত
দেখার জন্য হাইওয়ে ও শহরের বাইরের রাস্তায় ‘হাই বা আপার বা তীক্ষ্ম বিম’ ব্যবহার করা হয়। তবে, বিপরীতদিক থেকে আগত গাড়ি ১৫০ মিটারের মধ্যে চলে আসলে হাইবিম নিভিয়ে লাে-বিম জ্বালাতে হবে। অর্থাৎ বিপরীতদিক হতে আগত কোনাে গাড়িকে পাস/পার হওয়ার সময় লাে-বিম জ্বালাতে হবে।
৬১. প্রশ্ন : গাড়ির ব্রেক ফেল করলে করণীয় কী?
উত্তর: গাড়ির ব্রেক ফেল করলে প্রথমে অ্যাক্সিলারেটর থেকে পা সরিয়ে নিতে হবে। ম্যানুয়াল গিয়ার গাড়ির ক্ষেত্রে গিয়ার পরিবর্তন করে
প্রথমে দ্বিতীয় গিয়ার ও পরে প্রথম গিয়ার ব্যবহার করতে হবে। এর ফলে গাড়ির গতি অনেক কমে যাবে। এই পদ্ধতিতে গাড়ি থামানাে সম্ভব না হলে রাস্তার আইল্যান্ড, ডিভাইডার, ফুটপাত বা সুবিধামত অন্যকিছুর সাথে ঠেকিয়ে গাড়ি থামাতে হবে। ঠেকানাের সময় যানমালের ক্ষয়ক্ষতি যেনাে না হয় বা কম হয় সেইদিকে সজাগ থাকতে হবে।
৬২. প্রশ্ন : গাড়ির চাকা ফেটে গেলে করণীয় কী?
উত্তর : গাড়ির চাকা ফেটে গেলে গাড়ি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে। এই সময় গাড়ির চালককে স্টিয়ারিং দৃঢ়ভাবে ধরে রাখতে হবে এবং অ্যাক্সিলারেটর থেকে পা সরিয়ে ক্রমান্বয়ে গতি কমিয়ে আস্তে আস্তে ব্রেক করে গাড়ি থামাতে হবে। চলন্ত অবস্থায় গাড়ির চাকা ফেটে গেলে সাথে সাথে ব্রেক করবেন না। এতে গাড়ি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে।
৬৩. প্রশ্ন : হ্যাজার্ড বা বিপদ সংকেত বাতি কী ?
উত্তর : প্রতিটি গাড়ির সামনে ও পিছনে উভয়পাশের কর্ণারে একজোড়া করে মােট দু-জোড়া ইন্ডিকেটর বাতি থাকে। এই চারটি ইন্ডিকেটর
বাতি সবগুলাে একসাথে জ্বললে এবং নিভলে তাকে হ্যাজার্ড বা বিপদ সংকেত বাতি বলে। বিপজ্জনক মুহুর্তে, গাড়ি বিকল হলে এবং দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় এই বাতিগুলাে ব্যবহার করা হয়।
৬৪. প্রশ্ন : গাড়ির ড্যাশবাের্ডে কী কী ইট্রুমেন্ট থাকে ?
উত্তর :
- ক. স্পিডােমিটার- গাড়ি কত বেগে চলছে তা দেখায়।
- খ. ওডােমিটার - তৈরির প্রথম থেকে গাড়ি কত কিলােমিটার বা মাইল চলছে তা দেখায়।
- গ. ট্রিপমিটার- এক ট্রিপে গাড়ি কত কিলােমিটার/মাইল চলে তা দেখায়।
- ঘ. টেম্পারেচার গেজ- ইঞ্জিনের তাপমাত্রা দেখায়।
- ঙ. ফুয়েল গেজ- গাড়ির তেলের পরিমাণ দেখায়।
৬৫. প্রশ্ন : গাড়িতে কী কী লাইট থাকে ?
উত্তর : ক. হেডলাইট, খ. পার্কলাইট, গ. ব্রেকলাইট, ঘ. রিভার্সলাইট ঙ. ইন্ডিকেটরলাইট, চ, ফগলাইট এবং ছ, নাম্বারপ্লেট লাইট।
৬৬. প্রশ্ন : পাহাড়ি ও ঢাল/চুড়ায় রাস্তায় গাড়ি কোন গিয়ারে চালাতে হয় ?
উত্তরঃ ফার্স্ট গিয়ারে। কারণ ফার্স্ট গিয়ারে গাড়ি চালানাের জন্য ইঞ্জিনের শক্তি বেশি প্রয়ােজন হয়।
৬৭. প্রশ্ন : গাড়ির সামনে ও পিছনে লাল রঙের ইংরেজি “L” অক্ষরটি বড় আকারে লেখা থাকলে এরদ্বারা কী বুঝায় ?
উত্তরঃ এটি একটি শিক্ষানবিশ ড্রাইভারচালিত গাড়ি। এই গাড়ি হতে সাবধান থাকতে হবে।
৬৮. প্রশ্ন : শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়ে গাড়ি চালানাে বৈধ কী ?
উত্তরঃ ইনস্ট্রাক্টরের উপস্থিতিতে ডুয়েল সিস্টেম (ডাবল স্টিয়ারিং ও ব্রেক) সম্বলিত গাড়ি নিয়ে সামনে ও পিছনে “L” লেখা প্রদর্শন করে । নির্ধারিত এলাকায় চালানাে বৈধ।
৬৯. প্রশ্ন : ফোরহুইলড্রাইভ গাড়ি বলতে কী বুঝায়?
উত্তরঃ সাধারণত ইঞ্জিন হতে গাড়ির পেছনের দু-চাকায় পাওয়ার (ক্ষমতা) সরবরাহ হয়ে থাকে। বিশেষ প্রয়ােজনে যে-গাড়ির চারটি চাকায় (সামনের ও পিছনের) পাওয়ার সরবরাহ করা হয়, তাকে ফোরহুইলড্রাইভ গাড়ি বলে।
৭০. প্রশ্ন : ফোরহুইলড্রাইভ কখন প্রয়ােগ করতে হয় ?
উত্তরঃ ভালাে রাস্তাতে চলার সময় শুধুমাত্র পেছনের দু-চাকাতে ড্রাইভ দেওয়া হয়। কিন্তু পিচ্ছিল, কর্দমাক্ত রাস্তায় চলার সময় চার
চাকাতে ড্রাইভ দিতে হয়।
৭১. প্রশ্ন : টুলবক্স কী ?
উত্তর: টুলবক্স হচ্ছে যন্ত্রপাতির বাক্স, গাড়ির সঙ্গে রাখা হয়। মােটরযান জরুরি মেরামতের জন্য প্রয়ােজনীয় যন্ত্রপাতি ও মালামাল
টুলবক্সে রাখা হয়।
৭২. প্রশ্ন : ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত গাড়ি চালালে বা চালানাের অনুমতি দিলে শাস্তি কী ?
উত্তর : সর্বোচ্চ ৪ মাস কারাদণ্ড অথবা ৫০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয়দণ্ড (মােটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর ১৩৮ ধারা)। এই ক্ষেত্রে মালিক ও চালক উভয়েই দণ্ডিত হতে পারেন।
৭৩. প্রশ্ন : গাড়িতে গাড়িতে নিষিদ্ধ হর্ন কিংবা উচ্চশব্দ উৎপাদনকারী যন্ত্র সংযােজন ও তা ব্যবহার করলে শাস্তি কী ?
উত্তরঃ ১০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা (মােটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর ১৩৯ ধারা)।
৭৪. প্রশ্ন : রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, ফিটনেস সার্টিফিকেট ও রুপারমিট ব্যতীত গাড়ি চালালে বা চালানাের অনুমতি দিলে শাস্তি কী ?
উত্তরঃ প্রথমবার অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ৩ মাস কারাদণ্ড অথবা ২০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয়দণ্ড। দ্বিতীয়বার বা পরবর্তী সময়ের জন্য সর্বোচ্চ ৬ মাস কারাদণ্ড অথবা ৫০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয়দণ্ড (মােটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর ১৫২ ধারা)। এই ক্ষেত্রে মালিক ও চালক উভয়েই দণ্ডিত হতে পারেন ।
৭৫. প্রশ্ন : মদ্যপ বা মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালনার শাস্তি কী ?
উত্তর : সর্বোচ্চ ৩ মাস কারাদণ্ড বা ১০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয়দণ্ড। পরবর্তী সময়ে প্রতিবারের জন্য সর্বোচ্চ ২ বছর পর্যন্ত
কারাদণ্ড বা ১০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয়দণ্ড এবং নির্দিষ্ট মেয়াদে ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল (মােটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর ১৪৪ ধারা)।
৭৬. প্রশ্ন : নির্ধারিত গতির চেয়ে অধিক বা দ্রুত গতিতে (Over Speed) গাড়ি চালনার শাস্তি কী ?
উত্তর: প্রথমবার অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ ৩০ দিন কারাদণ্ড বা ৩০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয়দণ্ড। পরবর্তীতে একই অপরাধ করলে সর্বোচ্চ ৩ মাস কারাদণ্ড বা ৫০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয়দণ্ড এবং ড্রাইভিং লাইসেন্সের কার্যকারিতা ১ মাসের জন্য স্থগিত (মােটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর ১৪২ ধারা)।
৭৭. প্রশ্ন : বেপরােয়া ও বিপজ্জনকভাবে গাড়ি চালনার শাস্তি কী ?
উত্তর : সর্বোচ্চ ৬ মাস কারাদণ্ড বা ৫০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা এবং যে-কোনাে মেয়াদের জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্সের কার্যকারিতা স্থগিত (মােটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর ১৪৩ ধারা)।
৭৮. প্রশ্ন : ক্ষতিকর ধোয়া নির্গত গাড়ি চালনার শাস্তি কী ?
উত্তর: ২০০ টাকা জরিমানা (মােটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর ধারা-১৫০)।
৭৯. প্রশ্ন : নির্ধারিত ওজন সীমার অধিক ওজন (Over Load) বহন করে গাড়ি চালালে বা চালানাের অনুমতি দিলে শাস্তি কী ?
উত্তর : প্রথমবার ১,০০০ পর্যন্ত জরিমানা এবং পরবর্তী সময়ে ৬ মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা ২,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয়দণ্ড (ধারা-১৫৪)। এই ক্ষেত্রে মালিক ও চালক উভয়েই দণ্ডিত হতে পারেন ।
৮০. প্রশ্ন : ইনসিওরেন্স বিহীন অবস্থায় গাড়ি চালনার শাস্তি কী ?
উত্তর: ২,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা (মােটরযান অধ্যাদেশ, ১৯৮৩ এর ধারা-১৫৫)।
৮১. প্রশ্ন : প্রকাশ্য সড়কে অথবা প্রকাশ্য স্থানে মােটরযান রেখে মেরামত করলে বা কোনাে যন্ত্রাংশ বা দ্রব্য বিক্রয়ের জন্য সড়কে রেখে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে শাস্তি কী ?
উত্তর : সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা জরিমানা। অনুরূপ মােটরযান অথবা খুচরা যন্ত্র বা জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করা যাবে (ধারা-১৫৭)।
৮২. প্রশ্ন : গাড়ি রাস্তায় চলার সময় হঠাৎ ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেলে প্রথমে কী চেক করতে হবে ?
উত্তর: ফুয়েল বা জ্বালানি আছে কি না চেক করতে হবে।
৮৩. প্রশ্ন : পেট্রোল ইঞ্জিন স্টার্ট করতে ব্যর্থ হলে কোন দুটি প্রধান বিষয় চেক করতে হয় ?
উত্তর: (ক) প্লাগ পয়েন্টে ঠিকভাবে স্পার্ক হচ্ছে কি না চেক করতে হয়।
(খ) কার্বুরেটরে পেট্রোল যাচ্ছে কি না চেক করতে হয়।
৮৪. প্রশ্ন : ফুয়েল ও অয়েল বলতে কী বুঝায় ?
উত্তর : ফুয়েলা বলতে জ্বালানি অর্থাৎ পেট্রোল, অকটেন, সিএনজি, ডিজেলা ইত্যাদি বুঝায় এবং অয়েলা বলতে লুব্রিকেটিং অয়েল বা লুব
অয়েল বা মবিল বুঝায়।
৮৫. প্রশ্ন : লুব অয়েল (মবিল) এর কাজ কী ?
উত্তরঃ ইঞ্জিনের বিভিন্ন ওয়ার্কিংপার্টস (যন্ত্রাংশ) সমূহকে ঘুরতে বা নড়াচড়া করতে সাহায্য করা, ক্ষয়হতে রক্ষা করা এবং ইঞ্জিন পার্টস সমূহকে ঠান্ডা ও পরিষ্কার রাখা মবিলের কাজ।
৮৬. প্রশ্ন : কম মবিল বা লুব অয়েলে ইঞ্জিন চালালে কী ক্ষতি হয় ?
উত্তরঃ বিয়ারিং অত্যধিক গরম হয়ে গলে যেতে পারে এবং পিস্টন সিলিন্ডার জ্যাম সিজড় হতে পারে।
৮৭. প্রশ্ন : লুব অয়েল (মবিল) কেন এবং কখন বদলানাে উচিত ?
উত্তরঃ দীর্ঘদিন ব্যবহারে মবিলে ইঞ্জিনের কার্বন, ক্ষয়িত ধাতু, ফুয়েল, পানি ইত্যাদি জমার কারণে এর গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায় বিধায় মবিল বদলাতে হয় । গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রদত্ত ম্যানুয়াল / হ্যান্ডবুকের নির্দেশ মােতাবেক নির্দিষ্ট মাইল / কিলােমিটার চলার পর মবিল বদলাতে হয়।
৮৮. প্রশ্ন : ইঞ্জিনে অয়েল (মবিল) এর পরিমাণ কিসের সাহায্যে পরীক্ষা করা হয় ?
উত্তরঃ ডিপস্টিক এর সাহায্যে।
৮৯. প্রশ্ন : টায়ার প্রেসার বেশি বা কম হলে কী অসুবিধা হয় ?
উত্তরঃ টায়ার প্রেসার বেশি বা কম হওয়া কোনটিই ভালাে নয়। টায়ার প্রেসার বেশি হলে মাঝখানে বেশি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, আবার টায়ার প্রেসার কম হলে দু-পাশে বেশি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। ফলে টায়ার তারাতারি নষ্ট হয়ে যায়।
৯০. প্রশ্ন : কোন নির্দিষ্ট টায়ারের প্রেসার কত হওয়া উচিত তা কীভাবে জানা যায় ?
উত্তরঃ টায়ারের আকার (size), ধরন (type) ও লােড (বােঝা) বহন ক্ষমতার ওপর নির্ভরকরে প্রস্তুতকারক কর্তৃক সঠিক প্রেসার নির্ধারণ করা হয়, যা প্রস্তুতকারকের হ্যান্ডবুক/ম্যানুয়ালে উল্লেখ থাকে।
৯১. প্রশ্ন : টায়ার রােটেশন কী ?
উত্তর : সবগুলাে টায়ারের ক্ষয় সমহারে হয় না। গাড়ির চাকাগুলাের ক্ষয়ের সমতা রক্ষার জন্য একদিকের টায়ার খুলে অপরদিকে কিংবা সামনের টায়ার খুলে পেছনে লাগানােকে অর্থাৎ টায়ারের স্থান পরিবর্তন করে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে লাগানাের পদ্ধতিকেই টায়ার রােটেশন বলে। এর ফলে টায়ারের আয়ু বহুলাংশে বেড়ে যায়। উল্লেখ্য, লােয়ার সাইজের স্পেয়ার চাকা কখনাে সামনে লাগানাে উচিৎ নয়।
৯২. প্রশ্ন : ব্যাটারির কাজ কী ?
উত্তর :
- ক. ইঞ্জিনকে চালু করতে সহায়তা করা।
- খ. পেট্রোল ইঞ্জিনের ইগনিশন সিস্টেমে কারেন্ট সরবরাহ করা।
- গ. সকল প্রকার লাইট জ্বালাতে এবং মিটারসমূহ চালাতে সহায়তা করা।
- ঘ. হর্ন বাজাতে সাহায্য করা।
৯৩. প্রশ্ন : নিয়মিত ব্যাটারির কী পরীক্ষা করা উচিত ?
উত্তরঃ পানির লেভেল।
৯৪. প্রশ্ন : সময় ও প্রয়ােজনমতাে ব্যাটারিতে ডিস্টিল্ড ওয়াটার না দিলে কী হয় ?
উত্তরঃ ব্যাটারি ক্যাপাসিটি কমে যায় এবং প্লেট নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
৯৫. প্রশ্ন : ব্যাটারির টার্মিনাল হতে মরিচা দূর করা হয় কেন ?
উত্তরঃ মরিচা সন্তোষজনক বৈদ্যুতিক সংযােগে বাধা দেয় এবং কালক্রমে টার্মিনালের ভিতর দিয়ে মরিচা পড়ে ও সম্পূর্ণ টার্মিনাল নষ্ট হয়ে যায়।
৯৬. প্রশ্ন : মরিচা পরিষ্কার করার পর টার্মিনালে কী করা উচিত?
উত্তর : গ্রিজ লাগানাে উচিত।
৯৭. প্রশ্ন : মােটরগাড়িতে ব্যবহৃত ব্যাটারির ভােল্টেজ কত থাকে ?
উত্তরঃ ৬ ভােল্ট এবং ১২ ভােল্ট থাকে। (বড় ট্রাকে এবং বাসে ২৪ ভােল্টের ব্যাটারিও ব্যবহৃত হয়ে থাকে)।
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত প্রশ্ন ও উত্তর
০১. প্রশ্ন : পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স কাকে বলে ? উত্তর ঃ যে-লাইসেন্স দিয়ে একজন চালক বেতনভােগী কর্মচারী হিসাবে কোনাে মােটরযান চালিয়ে থাকে, তাকে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স
বলে।
০২. প্রশ্ন : পিএসভি লাইসেন্স কী ?
উত্তর : পিএসভি অর্থ পাবলিক সার্ভিস ভেহিকেল। ভাড়ায় চালিত যাত্রীবাহী মােটরযান চালানাের জন্য প্রত্যেক চালককে তার লাইসেন্সের অতিরিক্ত হিসাবে পিএসভি লাইসেন্স গ্রহণ করতে হয়।
০৩. প্রশ্ন : পাবলিক সার্ভিস মােটরযান (public service vehicle) কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে-মােটরযান ভাড়ার বিনিময়ে যাত্রী বহনের জন্য ব্যবহৃত হয়, তাকে পাবলিক সার্ভিস মােটরযান বলে। ভাড়ায় চালিত বাস , মিনিবাস, হিউম্যানহলার (লেগুনা), ট্যাক্সিক্যাব ইত্যাদি পাবলিক সার্ভিস মােটরযানের অন্তর্ভুক্ত।
০৪. প্রশ্ন : বাসের আসন সংখ্যা কত ?
উত্তর : চালকসহ ৩১ জনের বেশি অর্থাৎ চালকসহ সর্বনিম্ন ৩২ জন।
০৫. প্রশ্ন : মিনিবাসের আসন সংখ্যা কত?
উত্তরঃ চালকসহ সর্বনিম্ন ১৬ জন এবং সর্বোচ্চ ৩১ জন।
০৬. প্রশ্ন : একজন পেশাদার চালক দৈনিক কত ঘণ্টা গাড়ি চালাবে বা মােটরযানে কর্মঘন্টা কত ?
উত্তরঃ এক নাগাড়ে ৫ ঘণ্টার বেশি নয়। অতঃপর আধাঘণ্টা বিশ্রাম বা বিরতি নিয়ে আবার ৩ ঘন্টা অর্থাৎ ১ দিনে ৮ ঘণ্টার বেশি নয়। তবে ১ সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টার বেশি নয়।
০৭. প্রশ্ন : ইঞ্জিন কাকে বলে ?
উত্তর : ইঞ্জিন হচ্ছে এক ধরনের যন্ত্র যেখানে জ্বালানি বা ফুয়েলকে পুড়িয়ে রাসায়নিক শক্তিকে প্রথমে তাপশক্তিতে এবং তাপশক্তিকে পরে । যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত করা হয়।
০৮. প্রশ্ন : ইঞ্জিনের প্রধান প্রধান কয়েকটি যন্ত্রাংশের নাম কী ?
উত্তর :
- ক. সিলিন্ডারহেড
- খ. সিলিন্ডারব্লক
- গ. পিস্টন
- ঘ. ক্রাংকশ্যাক্ট
- ঙ. ক্যাম ও ক্যাম শ্যাফ্ট
- চ. কানেকটিং রড
- ছ. বিয়ারিং জ. ফ্লাই হুইল
- ঝ. অয়েলপ্যান ইত্যাদি।
০৯. প্রশ্ন : পেট্রোল ইঞ্জিন ও ডিজেল ইঞ্জিনের মধ্যে পার্থক্য কী ?
উত্তর :
- ক.পেট্রোল ইঞ্জিনে জ্বালানি হিসেবে পেট্রোল ব্যবহার হয় কিন্তু ডিজেল ইঞ্জিনে জ্বালানি হিসেবে ডিজেল ব্যবহার করা হয়।
- খ. পেট্রোল ইঞ্জিনে স্পার্ক করে ইগনিশন করা হয় কিন্তু ডিজেল ইঞ্জিনে কমপ্রেশন করে ইগনিশন করা হয়।
- গ. পেট্রোল ইঞ্জিনে কার্বুরেটর থাকে কিন্তু ডিজেল ইঞ্জিনে কার্বুরেটরের স্থলে ইনজেক্টর থাকে।
- ঘ. পেট্রোল ইঞ্জিন অটো সাইকেলে কাজ করে কিন্তু ডিজেল ইঞ্জিন ডিজেল সাইকেলে কাজ করে
১০. প্রশ্ন : কী কী লক্ষণ দেখা দিলে ইঞ্জিন ‘ওভার হলিং’ করার প্রয়ােজন হয় ?
উত্তর :
- ক. ইঞ্জিনে জ্বালানি এবং লুবঅয়েল (মবিল) বেশি খরচ হলে।
- খ. ইঞ্জিন হতে অত্যধিক কালাে ধোঁয়া বের হলে।
- গ. বােঝা বহন করার ক্ষমতা কমে গেলে।
- ঘ. ফার্স্ট গিয়ারে উঁচু রাস্তায় উঠবার সময় ইঞ্জিন গাড়িকে টানতে না পারলে।
১১. প্রশ্ন : ইঞ্জিন কুলিং সিস্টেমের কাজ বা উদ্দেশ্য কী ?
উত্তর : ইঞ্জিনের অতিরিক্ত তাপমাত্রা হ্রাস করে ইঞ্জিনকে কার্যকরী তাপমাত্রায় রাখাই কুলিং সিস্টেমের উদ্দেশ্য বা কাজ।
১২. প্রশ্ন : রেডিয়েটরের কাজ কী ?
উত্তর: রেডিয়েটরের কাজ পানি ঠান্ডা করা। রেডিয়েটর হতে ঠান্ডা পানি পাম্পের সাহায্যে ওয়াটার জ্যাকেটের মাধ্যমে ইঞ্জিনের বিভিন্ন
অংশে পৌঁছে ইঞ্জিনকে ঠান্ডা করে এবং গরম অবস্থায় পুনরায় রেডিয়েটরে ফিরে আসে। রেডিয়েটরে এই গরম পানি ঠান্ডা হয়ে পুনরায় ইঞ্জিনে যায়।
১৩. প্রশ্ন : কুলিং ফ্যানের কাজ কী ?
উত্তর: রেডিয়েটরের ভেতর দিয়ে বাতাস প্রবাহিত করা এবং গরম পানিকে ঠান্ডা করা।
১৪. প্রশ্ন : এয়ার কুলিং সিস্টেমে ইঞ্জিন কিভাবে ঠান্ডা হয় ?
উত্তর: ইঞ্জিন সিলিন্ডার ও হেডের চতুর্দিকে বেশ কিছু পাতলা লােহার পাত (ফিন) থাকে। বাতাসের সংস্পর্শে এই পাতলা লােহার পাতসমূহ ঠান্ডা হয়ে ইঞ্জিনকে ঠান্ডা রাখে। যেমনঃ মােটরসাইকেল, অটোরিক্সা ইত্যাদি গাড়িতে এয়ার কুলিং সিস্টেম দেখা যায়।
১৫. প্রশ্ন : ওয়াটার কুলিং সিস্টেমে কী ধরনের পানি ব্যবহার করা উচিত ?
উত্তর: ডিস্টিল্ড ওয়াটারের ন্যায় পরিষ্কার পানি, যেমন-পরিষ্কার পুকুর, নদী ও বৃষ্টির পানি ব্যবহার করা উচিত। সমুদ্রের লবনাক্ত পানি ও লৌহ মিশ্রিত পানি (কোনাে কোনাে টিউবওয়েলের পানি) ব্যবহার করা উচিত নয়।
১৬. প্রশ্ন : ফ্যানবেল্ট কোথায় থাকে ?
উত্তর : ইঞ্জিনের পুলি, ফ্যান পুলি ও ডায়নামাে পুলির ওপরে পরানাে থাকে।
১৭. প্রশ্ন : একটি ইঞ্জিন অত্যধিক গরম অবস্থায় চলছে তা কীভাবে বুঝা যাবে ?
উত্তর:
- (ক) ড্যাশবাের্ডে টেম্পারেচার মিটারের কাটা লাল দাগে চলে যাবে।
- (খ) ইঞ্জিনে খট খট শব্দ (নকিং) হবে।
- (গ) পানি বেশি বাস্পায়িত হয়ে ওভারফ্লো পাইপ দিয়ে বের হতে থাকবে।
- (ঘ) ক্রমান্বয়ে ইঞ্জিনের শক্তি কমতে থাকবে।
১৮. প্রশ্ন : ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হলে করণীয় কী এবং এ অবস্থায় গাড়ি চালালে কী অসুবিধা হবে ?
উত্তর : প্রথমে ইঞ্জিন বন্ধকরে সুবিধামতাে স্থানে গাড়ি পার্ক করতে হবে এবং বনেট খুলে ইঞ্জিন ঠান্ডা হতে দিতে হবে। তারপর ইঞ্জিন গরম হওয়ার কারণ অনুসন্ধান করেসেই মােতাবেক প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হলে যে-কোনাে মুহুর্তে পিষ্টন ও বেয়ারিং গলে গিয়ে ইঞ্জিন জ্যাম সিজড হয়ে যেতে পারে। এর ফলে ইঞ্জিন পুনরায় ওভারহলিং করতে হবে, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল।
১৯. প্রশ্ন : এয়ারক্লিনারের কাজ কী ?
উত্তর: বাতাসে যে-সমস্ত ধূলিকণা থাকে তা পরিষ্কার করে বিশুদ্ধ বাতাস ইঞ্জিনে সরবরাহ করা। পরিষ্কার বাতাস কার্বুরেটরের মধ্যে প্রবেশ না করলে ধূলিকণা পেট্রোলের সাথে মিশ্রিত হয়ে ইঞ্জিনের সিলিন্ডার, পিস্টন এবং পিস্টন রিংয়ের অতি দ্রুত ক্ষয় সাধন করে।
২০. প্রশ্ন : কার্বুরেটরের অবস্থান কোথায় এবং এর কাজ কী?
উত্তর : কার্বুরেটরের অবস্থান ইঞ্জিনের ইনটেক ম্যানিফোল্ডের ওপরে ও এয়ারক্লিনারের নিচে। ফুয়েল ও বাতাসকে নির্দিষ্ট অনুপাতে মিশ্রিত করে ইঞ্জিনে সরবরাহ করাই এর কাজ।
২১. প্রশ্ন : ডিস্ট্রিবিউটরের কাজ কী ?
উত্তর: প্রত্যেকটি স্পার্ক প্লাগে হাইভােল্টেজ কারেন্ট পৌছে দেওয়া ডিস্ট্রিবিউটরের কাজ।
২২. প্রশ্ন : কনডেনসারের কাজ কী ?
উত্তর: ডিস্ট্রিবিউটরের কনট্যাক্টব্রেকার পয়েন্টকে পুড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করা।
২৩. প্রশ্ন : স্পার্ক প্লাগ কোথায় থাকে ?
উত্তর: পেট্রোল ইঞ্জিনের সিলিন্ডারহেডে।
২৪. প্রশ্ন : এয়ারলক ও ভেপারলক এর অর্থ কী ?
উত্তর: ফুয়েল লাইনে বাতাস প্রবেশের কারণে ফুয়েল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়াকে এয়ারলক বলে। ফুয়েল লাইন অত্যধিক তাপের সংস্পর্শে আসলে লাইনের ভেতর ভেপার বা বাষ্পের সৃষ্টি হয়। এই বাষ্পের চাপে লাইনের ভেতর ফুয়েল সরবরাহ বন্ধ হওয়াকেই ভেপারলক বলে।
২৫. প্রশ্ন : কোন কোন ত্রুটির কারণে সাধারণত ইঞ্জিন স্টার্ট হয় না ?
উত্তর :
- (ক) জ্বালানি (পেট্রোল/ডিজেল/সিএনজি) না থাকলে,
- (খ) ব্যাটারিতে চার্জ না থাকলে বা দুর্বল হলে,
- (গ) সেল্ফস্টাটার ঠিকমতাে কাজ না করলে,
- (ঘ) কার্বুরেটর ঠিকমতাে কাজ না করলে,
- (ঙ) ইগনিশন সিস্টেম ঠিকমতাে কাজ না করলে,
- (চ) ডিজেলইঞ্জিনের জ্বালানি লাইনে বাতাস ঢুকে গেলে।
২৬. প্রশ্ন : কী কী কারণে ইঞ্জিন চালু অবস্থায় বন্ধ হতে পারে ?
উত্তর :
- (ক) জ্বালানি (পেট্রোল/ডিজেল/সিএনজি) শেষ হয়ে গেলে বা সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে,
- (খ) ডিজেলইঞ্জিনের জ্বালানি লাইনে বাতাস ঢুকে গেলে,
- (গ) স্পার্কপ্লাগে অতিরিক্ত তেল (মবিল) বা কার্বন জমা হলে,
- (ঘ) কার্বুরেটরে ফ্লাডিং হলে অর্থাৎ কার্বুরেটরে অতিরিক্ত জ্বালানি সরবরাহ হলে,
- (ঙ) এক্সিলারেটর প্রয়ােজনমতাে না চেপে ক্লাচ প্যাডেল ছেড়ে দিলে,
- (চ) অতিরিক্ত বােঝা বহন করলে।
২৭. প্রশ্ন : ইগনিশন সিস্টেম ঠিক থাকা সত্ত্বেও একটি ঠান্ডা ইঞ্জিন স্টার্ট না হলে কী করতে হবে ?
উত্তর: মিকচার আরাে রিচ করতে হবে (এ্যাক্সিলারেটর দাবায়ে কার্বুরেটর ফ্লাডিং দ্বারা অথবা এয়ার ইনটেক সম্পূর্ণ বন্ধ করে)।
২৮. প্রশ্ন : ইগনিশন সিস্টেম ঠিক থাকা সত্ত্বেও একটি ইঞ্জিন গরম অবস্থায় স্টার্ট না হলে কী করতে
হবে ?
উত্তর: মিকচার খুব বেশি রিচ হলে এমনটি হয়। ইগনিশনসুইচ অফ করে এবং থ্রটলাভালাভ সম্পূর্ণ খুলে ইঞ্জিনকে কয়েকবার ঘুরাতে হবে। তারপর থ্রটলভালভ বন্ধ করে ইগনিশনসুইচ অন করতে হবে।
২৯. প্রশ্ন : ডিজেল ইঞ্জিনে গভর্নরের কাজ কী ?
উত্তর : গভর্নর ডিজেল ইঞ্জিনের ফুয়েল (ডিজেল) সরবরাহকে নিয়ন্ত্রন করে ইঞ্জিনের স্পিড বা গতি নিয়ন্ত্রন করে।
PDF Download Link: https://cutt.ly/yENCRyM