আমি যেভাবে ব্যাংকের প্রিলি পাশ করেছিলাম
যারা একদম নতুনভাবে শুরু করতে চাচ্ছেন তারা ৫ তারিখের পরীক্ষা স্থগিত হবার কারণে আরো একবার সুযোগ পাচ্ছেন নতুন ভাবে প্রস্তুত হতে।
প্রথমেই একটা বিষয় ক্লিয়ার করে নেই। আপনি যদি ম্যাথে দুর্বল থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার ব্যাংকে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা ৫%। মানে যদি কখনো এমন ম্যাথ আসে যে কেউ পারে না, একমাত্র তখনই আপনি এগিয়ে থাকার সুযোগ পাবেন । ঠিক এই জিনিসটা এক বড় ভাই বুঝিয়ে দিলেন। তারপর আমি যা করলাম সেটা হলো অংকের সব বই টেবিল থেকে সরিয়ে ফেললাম।
এরপর প্রথমে বাংলা এমপি৩ বই থেকে সাহিত্য অংশটুকু পড়লাম এবং বিগত বছরের যে প্রশ্নগুলো আমি পারিনা সেগুলা খাতায় লিখে আলাদা করলাম। ব্যাকরণ অংশের মুখস্থ অংশটুকু মানে এক কথায় প্রকাশ, বিপরীত শব্দ, বাগধারা, সমার্থক শব্দ,বানান ইত্যাদি বিগত বছরের গুলো নোট করলাম এবং ৯ম-১০ম শ্রেণীর বাংলা ২য় বইটা বুঝে বুঝে পড়ে শেষ করলাম।
তারপর ইংরেজি এর জন্য ক্লিফস ও ব্যারন'স টোফেল থেকে গ্রামার অংশটুকু পড়লাম। তারপর কম্পিটিটিভ এক্সাম বইটা পড়া শুরু করলাম। আমি গ্রামার রুলস গুলো খাতায় লিখতাম এবং তার নিচে একটা উদাহরণ লিখতাম। প্রিপোজিশন গ্রপ ভার্বের জন্য কোন চাপ না নিয়ে শুধু বিগত বছরের কমন গুলো খাতায় তুললাম। কমন কিছু প্রোভার্বও লিখলাম। সাইফুর্স এনালজি বই থেকে সব মিলে ১৩০-১৪০ টার মত এনালজি আলাদা করে খাতায় লিখে ফেললাম। সাইফুর্স স্টুডেন্ট ভোকাবুলারি থেকে যেগুলো পারিনা সেগুলা খাতায় লিখে আলাদা করে ফেললাম।
সাধারণ জ্ঞানের জন্য ইনসেপশনের বাংলাদেশ বিষয়াবলির একটা শিট আছে সেটা দুইবার রিডিং পড়লাম। আর ফেসবুক গ্রুপে নিয়মিত সাম্প্রতিক ও সাধারণ জ্ঞানের পোস্ট গুলো পড়ে শেষ করতাম। সাথে কারেন্ট এফেয়ার্স এর গুরুত্বপূর্ণ সাম্প্রতিক খাতায় নোট করতাম। সেই সাথে কারেন্ট এফেয়ার্সের শেষ দিকে পূর্ববর্তী মাসের পরীক্ষার সমাধান গুলো খুটিয়ে পড়তাম ও শেষ দিকের ব্যাংক, বিসিএস, নিবন্ধন এর বিষয় ভিত্তিক সাজেশন গুলোও পড়তাম।
কম্পিউটারের জন্য ইজি কম্পিউটার শেষ করলাম এবং বিগত বছরের যেগুলো পারিনা খাতায় লিখলাম। সাথে এক্সামভেডা থেকে জেনারেল কম্পিউটার পার্টটা পড়লাম এবং যেগুলো গুরুত্বপূর্ণ মনে হলো খাতায় লিখলাম। আপনি পরিশ্রমী হলে এই সবগুলো শেষ করতে ১৩-১৫ দিনের বেশি লাগবে না। এবার শুরু করলাম অংক। সাইফুর্স ম্যাথ বইটা খুটে খুটে সম্পুর্ণ শেষ করলাম। করার সময় যেগুলা প্রথম চেষ্টায় পারিনি সেগুলো দাগ দিয়ে রাখলাম। এবং অংকের সূত্রগুলো আলাদা করে খাতায় লিখে রাখলাম। এবার খাইরুলের রিসেন্ট ম্যাথ থেকে প্রিলি বিগত বছরের সবগুলো শেষ করলাম। এরপর ধরেছিলাম আগারওয়াল। এভাবে শুধু অংকই করে যেতাম। করতে করতে খুব বিরক্ত লাগলে তবেই অন্যান্য নোট গুলো চোখ বুলাতাম এবং ফেসবুক গ্রুপগুলোতে সময় দিতাম। আর ভোকাবুলারি নোটটা প্রতিদিন একবার চোখ বুলাতাম। পরীক্ষার একদিন আগে আমি কোন ম্যাথ করতাম না। আগের দিন বাংলা, ইংরেজি, কম্পিউটার, কারেন্ট এফেয়ার্স নোট পড়ে শেষ করতাম এবং সকালে ম্যাথের রুলস গুলো দেখে পরীক্ষা দিতে যেতাম।
আমি ফেসবুক গ্রুপগুলোর কাছে অনেক ঋণী। আমি অনেকের সাজেশন, টিপস্, নোট, মোটিভেশনাল কথা পড়তাম এবং ফলো করতাম। তাদের সবার প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা। একটা কথা মনে রাখবেন, সবাই মেসি হয়ে জন্মায় না, তবে রোনালদো হতে আপনার কোন বাঁধা নেই। নতুনদের জন্য শুভকামনা।
Courtesy:
AR Chanchal
সিনিয়র অফিসার
জনতা ব্যাংক লিমিটেড