সুস্থ থাকতে নিয়মতান্ত্রিক জীবন যাপনের কোন বিকল্প নেই। সুস্থ থাকার পরিমিত খাদ্যাভ্যাস, পরিশ্রম ও ব্যায়াম যথেষ্ট । দেহ থাকলে রোগ হবেই ।আজকাল সুস্থ থাকাটাই একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে । আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা , খাদ্যাভ্যাস ও সুস্থ মানসিকতাই আমাদের সুস্বাস্থ্যের চাবিকাঠি । সুস্থ থাকার জন্য আজকাল নানারকম পরামর্শ ইন্টারনেটে, বিভিন্ন পত্র পত্রিকায়, ম্যাগাজিনে পাওয়া যায় । সে সব অনুসরণ করা যেতে পারে । ইন্টারনেটে সুস্থ থাকার হাজারো উপায় দিতে পারবেন । বিষয়টা অনেকটা নানা মনীষীর নানা মত এই ধরনের । তবে কোন শিক্ষায় বিফলে যায়না সকল নিয়ম গুলি কোন কোন কাজে অবশ্যই লাগবে । এর মধ্যে থেকে সাধারণত দশটি নিয়ম আজ আপনাদের সামনে তুলে ধরব যেগুলো নিয়মিত অনুসরণ করলে আপনার শরীর ও স্বাস্থ্য ভালো থাকবে ।
Follow 10 rules to stay healthy
সবচেয়ে প্রথম যে বিষয়টা জরুরী সেটা হল পর্যাপ্ত ঘুম । বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা ইন্টারনেট থেকে সুস্থ থাকার হাজারো উপায় পাবেন, তবে লক্ষ্য করে দেখবেন ঘুমের বিষয়টা হয়তো সবার শেষে অথবা কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখতেই পারবেন না । কিন্তু শরীর সুস্থ রাখার সবচেয়ে মুখ্য চাবিকাঠি হলো পর্যাপ্ত ঘুম । আপনার প্রয়োজন অনুসারে যদি আপনি না ঘুমান তবে কোনদিনও আপনার শরীর সুস্থ হবে না । পর্যাপ্ত ঘুম না আসার কারণে প্রায় ৯০ ভাগ ভিন্ন ভিন্ন রোগের সৃষ্টি হতে পারে ।
[২]
কখনো খারাপ চিন্তা করবেন না । মনে রাখবেন আপনি যেটি ভাববেন সেটাই অন্য কোনভাবে আপনার বাস্তব জীবনে ফিরে আসবে । ভালো চিন্তা থেকে ভালো কিছু পাবেন আর খারাপ চিন্তা করলে ঠিক খারাপ জিনিসগুলো ঘুরেফিরে আপনার সাথে ঘটবে । তাই কোন সময় রোগ ব্যাধি নিয়ে খুব বেশি চিন্তায় মগ্ন হয়ে থাকবেন না অথবা ইন্টারনেট বা খবরের কাগজে বিভিন্ন অসুখের সন্ধান করতে যাবেন না । এমনকি কোন রোগের কি ওষুধ এগুলো খোঁজার চেষ্টা করবেন না কারণ আপনি সাধারণ মানুষ কোন ডাক্তার নন । ভবিষ্যৎতে আপনার কোন সমস্যা হলে ডাক্তারই বলে দেবে আপনাকে কি করতে হবে । চিন্তাভাবনার পরিবর্তন করুন । মনে রাখবেন আপনি যে ধরনের চিন্তা করবেন আপনার সাথে ঠিক সেরকমটাই ঘটবে ।
ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করুন । শারীরিক পরিশ্রম করতে হয় এমন কাজ করুন । প্রতিদিন ব্যায়াম করুন । প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে হাটুন । প্রতিদিন খুব সকালে ঘুম থেকে উঠুন । সারা দিন শুয়ে-বসে অযথা থাকবেন না, আবার দিনভর পরিশ্রমও নয়। কাজের ফাঁকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে । শারীরিক ব্যায়ামের দিকে বিশেষ নজর দিন । বিশেষ করে স্ট্রেচিং এবং যোগব্যায়ামের দিকে ।
[৪]
পরিমাণ মতো পানি পান করুন । সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পানি পান করা শরীরের জন্য খুব উপকারী । পানি সকালে বেশি পান করুন, রাতে তুলনামূলক কম । সারা দিনে যখনই সময় পাবেন তখনই বড় বড় নিঃশ্বাস নিন এবং ছাড়ুন ।
[৫]
বেশি পরিমাণে সবুজ শাক-সবজি আর ফলমূল খাবেন । গাজর ক্যারোটিনসমৃদ্ধ সবজি । শিশুর ছয় মাস বয়স থেকে গাজরের রস দিতে পারলে ভালো হয় । এতে ত্বক, চুল ও চোখ ভালো থাকে। শ্বাস-প্রশ্বাসের সংক্রমণ, চোখ ও ত্বকের সংক্রমণে গাজর খুবই উপকারী । খাদ্য তালিকায় ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার রাখুন। পরিমিত পরিমাণে ভিটামিন এ এবং ই সমৃদ্ধ ফল এবং শাক সবজি নিয়মিত গ্রহণ করুন। চর্বি ও তৈলযুক্ত খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন ।
[৬]
সামান্য সমস্যা হতে না হতেই, যেমন একটু মাথাব্যথা, গ্যাসে সমস্যা ও সামান্য জ্বর এসব হতে না হতেই ঔষধ সেবন হতে বিরত থাকুন । সাধারণ সর্দি-কাশি বা জ্বর হলে নিজে নিজে অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না । চিকিৎসক বা কোন ফার্মাসিস্ট এর পরামর্শ ব্যতীত কোন প্রকার ওষুধ সেবন করবেন না । যে কোন ঔষধ খাওয়ার পূর্বে কোন একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন । খুব ঠাণ্ডা বা খুব গরম পানি দিয়ে ওষুধ খাবেন না । ওষুধ খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুয়ে পড়বেন না ।
[৭]
কম্পিউটার বা কোন এক জিনিসের ওপর মনোযোগ নিবদ্ধ করে অনেক সময় ব্যয় করবেন না । অফিসে কোনো দীর্ঘসময়ের জন্য যদি কম্পিউটার ব্যবহার করা লাগে তবে কাজের ফাঁকে মাঝে মধ্যে উঠে একটু হাঁটাহাঁটি করে নিন । বিরতি নিয়ে কাজ করুন। তাড়া যতই থাকুক প্রতি এক ঘণ্টা কাজ করার পর এক-দু্ই মিনিট চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নেওয়া উচিত। এতে মস্তিষ্ক পরিষ্কার হয় এবং সচল থাকে । সব সময় সোজা হয়ে বসুন। দীর্ঘসময় এক জায়গায় বসে থাকবেন না। চেয়ার ছেড়ে ১০ মিনিট হেঁটে আসুন ।
[৮]
দিনের বেলা ঘুম এড়িয়ে চলুন । রাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন । রাতের ঘুমানোর অত্যন্ত দু ঘন্টা পূর্বে রাতের খাবার সম্পূর্ণ করুন । খাবার গ্রহণ করার আগে ও টয়লেট ব্যবহারের পর অবশ্যই হাত ধুয়ে নিন । যখনই খাবার খাবেন তখন ভালো করে চিবিয়ে খাবার গ্রহণ করুন । বিকাল পার হয়ে গেলে ভারী খাবার খাবেন না ।