পড়তে বসলে ঘুম আসার পেছন বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক কারণ খুঁজে বের করেছেন। প্রথমত, বই পড়তে গেলে চোখ সবসময় বইয়ের পাতার দিকে নিবদ্ধ রাখতে হয়, এবং প্রতি মুহূর্তে চোখকে বাম থেকে ডান দিকে, আবার ডান থেকে বাম দিকে ঘোরাতে হয়। শুধু তা-ই না, চোখ যেসব দেখে, সেগুলোর মাধ্যমে মস্তিষ্ককে অর্থবোধক শব্দ, বাক্য ও অনুচ্ছেদও তৈরি করে নিতে হয়, এবং সেগুলো দ্বারা কী বোঝানো হচ্ছে, তা-ও অনুধাবন করতে হয়। আবার পাঠ্যপুস্তক পড়ার সময় বাড়তি চাপ হিসেবে যোগ হয় পঠিত বিষয়বস্তুকে ভবিষ্যতের জন্য মনে রাখার চ্যালেঞ্জ। এভাবে পড়ার সময় ক্রমাগত নাড়াচাড়ায় চোখের পেশি যেমন ক্লান্ত হয়ে পড়ে, তেমনই একসাথে অনেকগুলো কার্য সম্পাদন করতে গিয়ে মস্তিষ্কও ওঠে হাঁপিয়ে। তখন চোখ ও মস্তিষ্ক উভয়েরই বিশ্রামের প্রয়োজন পড়ে। আর ঘুমের চেয়ে শ্রেয়তর বিশ্রাম কী হতে পারে! তাই তো ধীরে ধীরে চোখের পাতা ভারি হয়ে আসে, এবং মস্তিষ্কে ঘুমের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধ হতে থাকে।
আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, পড়ার সময় অনেকেই নিজের জন্য একটি আরামদায়ক অবস্থা তৈরি করে নিতে চায়। অনেকেই হয়তো শুয়ে শুয়ে পড়ে, আবার অনেকে বিশ্রামের ভঙ্গিতে শরীর এলিয়ে দিয়ে পড়ে। তাদের কাছে মনে হয় এভাবে পড়লে পড়া সহজ হবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। শরীরকে যখন আরামদায়ক অনুভূতির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়, তখন মস্তিষ্ক ধরেই নেয় যে এখন সময় কেবল বিশ্রামের। অথচ তখন যদি পড়ার মতো মানসিক পরিশ্রমের একটি কাজ করতে যাওয়া হয়, তখন মস্তিষ্ক বিদ্রোহ করে বসে। ফলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ক্লান্তি ও ঘুম ঘুম ভাব অনুভূত হয় ।